প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
বিশ্বের সাতটি শীর্ষ শিল্পোন্নত দেশের জোট জি-৭ মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত ও উত্তেজনা নিরসনে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে জোটটি জানিয়েছে, এই অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করাই তাদের অগ্রাধিকার এবং এ লক্ষ্যে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিবৃতিটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয় এবং এতে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
জি-৭-এর প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল ও অন্যান্য পক্ষের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে। তারা আবারও জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে যে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে জি-৭-এর সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তবে সেই সঙ্গে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে বিশেষভাবে ইরানকে লক্ষ্য করে বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পেছনে দেশটির ভূমিকা রয়েছে। তারা সতর্ক করে জানায়, ইরান যেন কোনোভাবেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, সে বিষয়ে জি-৭ এককাট্টা অবস্থানে আছে। ইরান ইস্যুর শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধানকেই তারা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় হিসেবে বিবেচনা করছে।
এছাড়া বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাত এবং সেখানে বেসামরিক মানুষের দুরবস্থার বিষয়টিও গভীর উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। নেতারা বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে, যাতে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়।
বিশ্ব অর্থনীতিতে চলমান চাপ ও জ্বালানির সরবরাহসংক্রান্ত সংকট নিয়েও জি-৭ নেতারা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত বিশ্ববাজারে তেলের দামে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই পরিস্থিতি সমাধানে তারা যৌথভাবে কাজ করার আশ্বাস দেন।
সংক্ষেপে বলা যায়, জি-৭-এর এই বিবৃতি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট নিরসনে কেবল রাজনৈতিক সমর্থনের কথা বলছে না, বরং সামগ্রিকভাবে এক স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ আন্তর্জাতিক পরিবেশ গঠনের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার বার্তা দিচ্ছে। জোটটি আবারও প্রমাণ করেছে যে, কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, বরং মানবিক, রাজনৈতিক এবং কৌশলগত বিষয়েও তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।