শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

কোয়াড বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে মার্কো রুবিওর বার্তা: চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে বাড়ছে উত্তেজনা

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ৫ বার
কোয়াড বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে মার্কো রুবিওর বার্তা: চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বে বাড়ছে উত্তেজনা

প্রকাশ: ২রা জুলাই, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রে বর্তমানে অন্যতম আলোচিত বিষয় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, যেখানে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই প্রেক্ষাপটে কোয়াড জোটভুক্ত চার দেশের (যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যেখানে শান্তি, নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিষয়ে একযোগে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা পুনরায় তুলে ধরা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব মার্কো রুবিও বৈঠক শেষে বলেন, “কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আমরা কিভাবে একসঙ্গে কাজ করব, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।” এই বক্তব্য পোস্ট করা হয় ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাব মোকাবেলায় কোয়াড জোটের এই উদ্যোগকে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা একটি কৌশলগত প্রতিরক্ষা বলয় গঠনের প্রয়াস হিসেবে দেখছেন। সমুদ্রপথে নিরাপত্তা, মুক্ত বাণিজ্য, টেকসই উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক শৃঙ্খলার বিষয়টি মূল আলোচনায় স্থান পায়। এছাড়া সম্প্রসারিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনৈতিক সমন্বয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এমন প্রেক্ষাপটে কোয়াড জোটের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কিছু টানাপোড়েনও সামনে এসেছে। বৈঠকের ঠিক আগে জাপান পূর্বনির্ধারিত একটি বার্ষিক প্রতিরক্ষা বৈঠক স্থগিত করে। কারণ হিসেবে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি প্রতিরক্ষা ব্যয়ের চাপ, যা টোকিওকে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করছে। জাপান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে সংশয় আরও জোরদার হয় যখন দেখা যায় ফেব্রুয়ারিতে শিগেরু ইশিবার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে ভারতও প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি ট্রাম্পের একটি বক্তব্যে দাবি করা হয়, এপ্রিলে কাশ্মীরের পর্যটকদের ওপর হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের সম্ভাব্য যুদ্ধ রোধে তিনি ‘হস্তক্ষেপ’ করেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবি নাকচ করে বলা হয়, এই বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখনো শক্ত ভিতের উপর থাকলেও, রাষ্ট্রদূত নিয়োগ, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগে শূন্যপদ পূরণ না হওয়ায় দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও এগিয়ে নিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকেও অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত আকুস (AUKUS) প্রকল্পের অধীনে পারমাণবিক সাবমেরিন সরবরাহ নিয়ে নতুন করে দ্বিধা তৈরি হয়েছে। পেন্টাগনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এলব্রিজ কোলবি এই প্রকল্প পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানোয় ক্যানবেরায় রাজনৈতিক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, কোয়াড জোটের সদস্য দেশগুলো চীনের আধিপত্য রুখতে একমত হলেও ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা সিদ্ধান্ত, উচ্চ শুল্কনীতি, এবং অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক জটিলতা জোটের সম্মিলিত অগ্রগতিতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৌশলগত অংশীদারিত্বকে বাস্তবায়ন করতে হলে শুধু যৌথ বৈঠক নয়, বরং বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় আস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠাও প্রয়োজন।

সাম্প্রতিক বৈঠকটি তাই যেমন প্রতিশ্রুতিমূলক আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে, তেমনই উন্মোচিত করেছে কোয়াডের অভ্যন্তরীণ দ্বিধা ও অসামঞ্জস্যের চিত্র। ইন্দো-প্যাসিফিকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এখন এই চার রাষ্ট্র কিভাবে তাদের নিজস্ব স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যেতে পারে তার উপর। একদিকে চীনের প্রভাব, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ বৈষম্য—এই দ্বিমুখী চাপে কোয়াডের কৌশলগত একতা রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫