প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন
মামলা, গ্রেপ্তার, কারাবাস—সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। ১৮ মে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এক হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি এবং এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে আইনগত প্রক্রিয়ায় জামিন পেয়ে মুক্তি পাওয়ার পর নিজের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে আবারও গোছাতে শুরু করেছেন এই অভিনেত্রী। একসময় যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছিলেন দারুণ সরব, সেই ফারিয়া কারামুক্তির পর দীর্ঘদিন নিরবতা পালন করেন। তবে ধীরে ধীরে সেই নীরবতা ভেঙে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরেছেন তিনি, ফিরেছেন নিজের চেনা দুনিয়ায়—রূপালি পর্দায়ও।
সম্প্রতি নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি সিনেমার পোস্টার শেয়ার করে আবারও আলোচনায় আসেন ফারিয়া। পোস্টটি ছিল তার নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘জ্বীন-৩’ নিয়ে, যা এবারের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। পোস্টারে চোখে পড়ার মতো একটি লাইন ছিল, যা সিনেমাটির ভৌতিক থিমের প্রতি ইঙ্গিত দেয়—“অন্ধকারে লুকিয়ে আছে এক ভয়ংকর সত্য। ‘জ্বীন-৩’ থেকে এবার কেউ রেহাই পাবে না।”
এই পোস্টের পরপরই ভক্তদের প্রতিক্রিয়া ছিল উষ্ণ ও উৎসাহী। অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অভিনেত্রীকে আবার পর্দায় ফিরে আসার জন্য, কেউ কেউ আবার সিনেমাটি দেখে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন এবং তাদের মন্তব্যে উঠে এসেছে রোমাঞ্চ, ভয় ও চমকপ্রদ গল্পের অভিজ্ঞতা। একজন মন্তব্যে লেখেন, “অসাধারণ এক ভয়ংকর থ্রিলার উপস্থাপন করলেন আপনি! ‘জ্বীন-৩’ নিয়ে আপনার এই পোস্ট কৌতূহল বাড়িয়ে দিলো অনেক।”
‘জ্বীন-৩’ সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে একটি বাস্তব ঘটনার ছায়া অবলম্বনে। এটি পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা কামরুজ্জামান রোমান। তার পরিচালনায় এর আগের দুটি পর্ব ‘জ্বীন’ ও ‘জ্বীন-২’ সাড়া ফেলেছিল প্রেক্ষাগৃহে। সেই ধারাবাহিকতায় এই সিরিজের তৃতীয় কিস্তিটিও এবারের ঈদে মুক্তি পেয়েছে।
সিনেমাটিতে নুসরাত ফারিয়া ছাড়াও অভিনয় করেছেন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা আব্দুন নূর সজল, প্রবীণ অভিনেতা নাদের চৌধুরী, তানিয়া আহমেদ, মোস্তফা হীরা প্রমুখ। এদের সম্মিলিত অভিনয়ে এবং সিনেমার চিত্রনাট্য ও নির্মাণশৈলীতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়ের এক বাস্তব অনুভূতি, যা দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন সমালোচকরা।
চলমান আইনি প্রক্রিয়া, ব্যক্তিজীবনের নানা বিতর্ক এবং কারাবাসের অভিজ্ঞতার পর এই সিনেমার মাধ্যমে ফারিয়ার প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে তার ভক্ত ও সমালোচকদের কাছে একটি নতুন বার্তা পৌঁছে দিয়েছে—অন্ধকারের ভেতরেও আলো থাকে, আর একজন শিল্পীর সত্যিকারের পরিণতি তার কাজেই।
‘জ্বীন-৩’-এর সফলতা এই মুহূর্তে শুধু ফারিয়ার পেশাগত পুনরাবির্ভাব নয়, বরং এটি প্রমাণ করছে যে, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে একজন শিল্পী কীভাবে আবারও নিজের অবস্থান নির্মাণ করতে পারেন। সিনেমার বাণিজ্যিক সাফল্য যেমন একদিকে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এর প্রতিটি শটে একজন অভিনেত্রীর নিজের ভাঙচুর ও গড়ে ওঠার গল্পও যেন পর্দায় ধরা দিয়েছে, বিশেষ করে যখন সেই অভিনেত্রী বাস্তব জীবনেও এক ভয়ংকর সময় পার করে এসেছেন।
এখন অপেক্ষা, দর্শকদের ভালোবাসা আর প্রতিক্রিয়া কীভাবে এই সিনেমাকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। তবে শুরুটা যে আশাব্যঞ্জক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ‘জ্বীন-৩’ এর মধ্য দিয়ে নুসরাত ফারিয়া আবারও জানিয়ে দিলেন, তিনি ফিরে এসেছেন—আর এবার হয়তো আগের চেয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী, পরিণত এবং প্রস্তুত।