প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন
শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আরও একবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ। ২৮৬ রানের লক্ষ্য সামনে পেয়েও বাংলাদেশ থেমে যায় মাত্র ১৮৬ রানে, ফলে শ্রীলঙ্কার কাছে ৯৯ রানের বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে টাইগারদের। আর সেই সঙ্গে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও হাতছাড়া হলো।
এই সিরিজ দিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে পূর্ণকালীন অধিনায়কত্ব শুরু করেছিলেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শুরুটা আশাব্যঞ্জক হলেও শেষটা হলো হতাশাজনক। পুরো সিরিজজুড়েই যে সমস্যা ছিল সেটিই আবারও সামনে চলে এল—ব্যাটিং ব্যর্থতা।
শুরুতে কিছুটা সাফল্য পেয়েও সেটি ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে ব্যাটারদের ব্যর্থতা চোখে পড়ার মতো। দুই ম্যাচেই শুরুতে বোলাররা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হলেও ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন পারফরম্যান্স সব অর্জনকেই বৃথা করে দিয়েছে। ক্যান্ডির সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচেও একই ছবি—শুরুতে কিছু উইকেট হারানো, এরপর মিডল অর্ডারে কোনো জুটি গড়তে না পারা এবং একের পর এক ধসে পড়া উইকেট।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে হতাশ কণ্ঠে মিরাজ জানান, “শেষ ১০ ওভারে আমরা ভালো বল করেছি। স্পিনাররাও নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিয়েছে। কিন্তু আমরা যা পরিকল্পনা করেছিলাম ব্যাটিংয়ে, তা কাজে লাগাতে পারিনি। মিডল অর্ডারে কোনো জুটি হয়নি। শুরুতেই কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম, যা ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়।”
এই সিরিজেই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দায়িত্ব তুলে নেওয়া মিরাজ এখনো দলের ভারসাম্য নিয়ে সংগ্রামে রয়েছেন। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসরের পর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সেটি পূরণে এখনো সময় প্রয়োজন বলেই বিশ্বাস তার।
তবে তরুণদের নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক। তিনি বলেন, “দলে নতুন কিছু খেলোয়াড় এসেছে। আমরা সব সময়ই ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। তারা যদি আরও সুযোগ পায়, আমি বিশ্বাস করি তারা ভবিষ্যতে ভালো করবে। একটা দলকে গোছাতে সময় লাগে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই আমরা আছি।”
বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমানে একটি রূপান্তরের সময় চলছে। একদিকে সিনিয়রদের বিদায়, অন্যদিকে তরুণদের মাঝে থেকে নতুন নেতৃত্বের অভ্যুদয়। এমন প্রেক্ষাপটে সিরিজ হার যেমন হতাশাজনক, তেমনি ভবিষ্যতের জন্য কিছু শিক্ষাও দিয়ে গেল এই সফর।
তবে বাস্তবতা বলছে, বাংলাদেশকে এখনই আত্মসমালোচনার পথ বেছে নিতে হবে। বিশেষ করে ব্যাটিং ইউনিটকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। প্রতিপক্ষের মাটিতে সিরিজ জেতা কখনোই সহজ ছিল না, তবে সুযোগ পেয়েও সেটিকে কাজে লাগাতে না পারার আক্ষেপ দীর্ঘদিন তাড়িয়ে বেড়াবে টাইগারদের।
মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে এই দল কত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সেটিই এখন প্রশ্ন। সামনে অপেক্ষায় আরও চ্যালেঞ্জিং সফর ও প্রতিযোগিতা। সেইসবের আগে দলের ব্যাটিং দুর্বলতা চিহ্নিত করে যথাযথ প্রস্তুতির গুরুত্ব এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।