প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন
ক্রিকেট মাঠে তার অসাধারণ পারফরম্যান্সে তিনি হয়ে উঠেছেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি। সাকিব আল হাসান নামটি শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বের জন্যই এক গর্বের নাম। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে তার অভিজ্ঞতার পরিসর, পরিবর্তন এসেছে দৃষ্টিভঙ্গিতেও। ব্যাট-বলের বাইরে এবার নিজের সম্পর্ক, বিশ্বাস এবং বন্ধুতা নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন এই অলরাউন্ডার, তাও যুক্তরাষ্ট্রের এক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের এক অনুষ্ঠানে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিরতিতে থাকলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এখনও সক্রিয় রয়েছেন সাকিব। সোমবার (৭ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রে একটি লিগ ইভেন্টে অংশ নিতে গিয়ে পুরনো সতীর্থ তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক, অতীত স্মৃতি ও বন্ধুত্ব নিয়ে ব্যক্তিগত উপলব্ধির কথা তুলে ধরেন তিনি।
সাকিব বলেন, “আমি অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে তামিম ও মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে খেলেছি। প্রায় দুই যুগের মতো একসঙ্গে মাঠ ভাগ করেছি। এতটা দীর্ঘ সময় কারো সঙ্গে কাটানোটা একরকম পরিবার হয়ে ওঠে। তারা নিঃসন্দেহে আমার ভালো বন্ধু।”
তবে একইসঙ্গে তিনি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধির কথাও বলেন, যা অনেকের হৃদয় ছুঁয়ে যেতে পারে। সাকিব বলেন, “এই বয়সে এসে আমি বুঝেছি, বেস্ট ফ্রেন্ড বলে কিছু নেই। কাউকে আপনি শতভাগ বিশ্বাস করতে পারবেন, এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। যে বন্ধু আপনাকে কখনো পিছন থেকে আঘাত করবে না, যার ওপর আপনি নির্ভর করতে পারবেন—সেইই প্রকৃত বন্ধু।”
সাকিব আরও বলেন, “ক্রিকেটে অনেক ভালো বন্ধু পেয়েছি, কিন্তু ক্রিকেটের বাইরের জগতে এমন বিশ্বস্ত বন্ধু খুব কম আছে। এটাই বাস্তবতা। যাকে আপনি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারেন, তার সঙ্গেই আপনার বন্ধুত্ব সবচেয়ে প্রকৃত। আর সেটাই ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’।”
সাকিবের এই বক্তব্য অনেকের কাছেই আপাতভাবে বিস্ময় জাগাতে পারে, বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তামিম-সাকিব বন্ধুত্বের গল্প শুনে এসেছেন। তবে এটাও স্পষ্ট যে এই কথা কোনো আক্রোশ বা অভিযোগ নয়, বরং সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত এক পরিপক্ব উপলব্ধি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক এবং দলীয় পরিবেশ নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই চলে আসছে নানা আলোচনা। সেই প্রেক্ষাপটে সাকিবের এই বক্তব্য কেবল ব্যক্তি অনুভব নয়, বরং সমগ্র খেলোয়াড়জীবনের অভিজ্ঞতার এক দর্পণ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই সাকিবের এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকেই বলছেন, তার বক্তব্যে বাস্তবতার প্রতিফলন রয়েছে। আবার কেউ কেউ এটিকে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েন হিসেবেও দেখছেন।
তবে যেভাবেই দেখা হোক না কেন, সাকিব আল হাসানের কণ্ঠে উঠে আসা এই কথাগুলো যে কেবল একজন ক্রিকেটারের উপলব্ধি নয়, বরং একজন মানুষের আত্মদর্শনের প্রকাশ—এ নিয়ে খুব একটা দ্বিমত নেই। বন্ধুত্ব, বিশ্বাস এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে সাকিবের এমন খোলামেলা উচ্চারণ আবারও প্রমাণ করে, তিনি শুধু মাঠেই সাহসী নন, সত্য বলতেও তার ভয় নেই।