প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার সেনাসদরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার (Presidency of Defence Industries – SSB) সচিব অধ্যাপক হালুক গরগুন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
এই সৌজন্য সাক্ষাৎ কেবল দু’দেশের কৌশলগত বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি ভবিষ্যতে যৌথভাবে প্রতিরক্ষা খাতে আরও ঘনিষ্ঠ ও প্রযুক্তিভিত্তিক সহযোগিতার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ইঙ্গিতও বহন করে। সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সম্পর্ক, প্রযুক্তি বিনিময়, সামরিক সরঞ্জাম উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
তুরস্কের প্রতিনিধি হিসেবে অধ্যাপক হালুক গরগুন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও কারিগরি জ্ঞান বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, তুরস্ক তাদের প্রতিরক্ষা শিল্পে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে প্রস্তুত। তিনি বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্পকে আরও আধুনিক ও স্বনির্ভর করার প্রয়াসে কৌশলগত সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং তুরস্কের সঙ্গে যৌথভাবে আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম উৎপাদন ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিকাশে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা খাতের আধুনিকায়ন ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং তুরস্কের মতো পরীক্ষিত বন্ধু দেশ সেই অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সাক্ষাৎকালে উভয় পক্ষ ভবিষ্যতে নিয়মিত উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন, যা দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় ও ফলপ্রসূ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরেই কৌশলগত ও সামরিক সহযোগিতায় যুক্ত। বিভিন্ন সময় তুরস্কের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম আমদানি ছাড়াও যৌথ প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়ে এসেছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাচ্ছে, যেখানে শুধু সরঞ্জাম আমদানির মধ্যে সম্পর্ক সীমাবদ্ধ না রেখে, যৌথভাবে প্রযুক্তি উন্নয়ন ও উৎপাদনের দিকেও এগিয়ে যাচ্ছে উভয় দেশ।
এই সাক্ষাৎ দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সংযোজন এবং ভবিষ্যতে একটি আরও শক্তিশালী, প্রযুক্তিনির্ভর ও কৌশলগত অংশীদারত্ব গড়ার পথে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।