প্রকাশ: ২৭শে জুন’ ২০২৫ । নিজস্ব সংবাদদাতা । আজকের খবর অনলাইন
এএফসি নারী এশিয়ান কাপ ২০২৬-এর বাছাইপর্বকে ঘিরে অনুশীলনে কোনো ছাড় দিচ্ছে না বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ‘সি’ গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়ে প্রতিকূল আবহাওয়াও তাদের মনোবল দমাতে পারেনি। মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে পা রাখার পর থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হলেও, নিজেদের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রস্তুতিতে কোনো কমতি রাখছে না আফঈদা খন্দকারের নেতৃত্বাধীন দল।
বাংলাদেশের মেয়েরা ২৬ জুন পৌঁছায় মিয়ানমারে। উদ্দেশ্য, সময়ের আগে গিয়ে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। কিন্তু আগমনের পরদিন থেকেই টানা বৃষ্টিতে বাধা পড়ে মাঠের প্রস্তুতিতে। প্রথম দিন মাঠে নামার সুযোগ না পেলেও, খেলোয়াড়েরা সময় নষ্ট না করে জিমে শারীরিক কসরত করে কাটিয়ে দেন দিনটি। দ্বিতীয় দিনেও আকাশ ছিল মেঘলা, ভারী বৃষ্টির ধারা কমেনি। তবুও সকালে ইয়াঙ্গুনের ট্রেনিং ফিল্ডে অনুশীলনে নামে দল। স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঘাম ঝরায় তারা।
বাফুফে থেকে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় দলের অধিনায়ক আফঈদা বলেন, “মিয়ানমারে এসেই মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করছি। কোচ যেভাবে পরিকল্পনা দিচ্ছেন, আমরা ঠিক সেভাবেই কাজ করছি। সবাই ফুরফুরে মনোভাব নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃষ্টিতে অনুশীলন করতে বেশ ভালো লাগছে। আশা করছি পরিবেশের সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারব।”
এবারের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে স্বাগতিক মিয়ানমার, তুর্কমেনিস্তান ও বাহারাইন। এই চার দলের মধ্য থেকে কেবল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দলই জায়গা পাবে মূল পর্বে, যার আয়োজক অস্ট্রেলিয়া। প্রতিপক্ষদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ধরা হচ্ছে স্বাগতিক মিয়ানমারকে। ফিফা র্যাংকিংয়ে যাদের অবস্থান ৫৫তম, তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলছে, লড়াই করে পয়েন্ট আদায় করা সম্ভব।
দলের সহকারী কোচ মাহমুদা আক্তার জানান, “প্রথম দিন বৃষ্টির কারণে মাঠে অনুশীলন করা যায়নি, তাই আমরা জিম সেশন করেছি। পরদিন বৃষ্টির মধ্যেই মাঠে নেমে পুরোপুরি অনুশীলন করেছি। খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষা এবং মানসিকতা ইতিবাচক। সবাই সুস্থ ও ফিট রয়েছে।”
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ ২৯ জুন বাহারাইনের বিপক্ষে। এরপর রয়েছে মিয়ানমার ও তুর্কমেনিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই। এই কঠিন মিশনে নিজেদের প্রমাণের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে টাইগার রক্ষণ ও আক্রমণ লাইন। মেয়েরা এখন শুধু মাঠে তাদের প্রতিশ্রুতি দেখানোর অপেক্ষায়।
প্রত্যন্ত গ্রামে কিংবা শহরের মাঠে বেড়ে ওঠা এই তরুণী ফুটবলাররা এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের পতাকা উঁচু করে ধরার শপথ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। বৃষ্টিভেজা প্রস্তুতি হোক বা শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হওয়া—তাদের লক্ষ্য অটুট: অস্ট্রেলিয়ার টিকিট নিশ্চিত করা।