শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

উত্তর গাজায় হামলার সময় রাস্তার বোমায় নিহত ৫ ইসরায়েলি সেনা

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ১ বার
উত্তর গাজায় হামলার সময় রাস্তার বোমায় নিহত ৫ ইসরায়েলি সেনা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

গাজা উপত্যকার উত্তরে হামলা চালাতে গিয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শিকার হয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ইউনিট। রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত পাঁচ সেনা সদস্য। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৪ জন। এই ঘটনার পর পুরো গাজা সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই বিস্ফোরণকে “কৌশলগত বিপর্যয়” হিসেবে অভিহিত করেছে।

টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে জানা যায়, নিহত সেনাদের মধ্যে রয়েছেন জেরুজালেমের ২০ বছর বয়সী স্টাফ সার্জেন্ট মেইর শিমন আমার, সার্জেন্ট মোশে নিসিম ফ্রেচ, গাজা ডিভিশনের নর্দার্ন ব্রিগেডের ২৮ বছর বয়সী সার্জেন্ট বেনিয়ামিন আসুলিন, কেফির ব্রিগেডের নেটজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের ২০ বছর বয়সী স্টাফ সার্জেন্ট নোয়াম আহরন মুসগাদিয়া এবং ২১ বছর বয়সী স্টাফ সার্জেন্ট মোশে শমুয়েল নোল। তাঁদের প্রত্যেকেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কর্মরত ছিলেন।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জানায়, সোমবার রাত ১০টার কিছু পরে বেইত হানুনে স্থল অভিযান চালানোর সময় এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পদাতিক সৈন্যরা গোপনে পায়ে হেঁটে অগ্রসর হচ্ছিলেন। তারা কোনো সাঁজোয়া যান বা গাড়ির মধ্যে ছিলেন না। ফলে বিস্ফোরণের ধাক্কা সরাসরি শরীরে লাগে এবং গুরুতর ক্ষয়ক্ষতির সৃষ্টি হয়।

আইডিএফ আরও জানায়, যে স্থানে এই আক্রমণটি হয়েছে, সেখানে অভিযানের পূর্বে আকাশপথে নজরদারি ও লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা হয়েছিল। তবে তা সত্ত্বেও রাস্তার পাশে লুকিয়ে রাখা শক্তিশালী বোমাটি নজরে আসেনি, যা এই হতাহতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

নিহত সেনারা মূলত নেটজাহ ইয়েহুদা ইউনিটের সদস্য ছিলেন। তারা গাজার উত্তরের বেইত হানুন এলাকায় ৬৪৬তম রিজার্ভ প্যারাট্রুপার্স ব্রিগেডের সঙ্গে একত্রে অভিযান চালাচ্ছিলেন। এই ইউনিটটি গাজা ডিভিশনের উত্তর ব্রিগেডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।

ঘটনার পর পরই আইডিএফের শীর্ষ পর্যায়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের বিস্ফোরণ ঠেকাতে কঠোর নজরদারির পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে হামাস এবং অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গতিবিধি ও কৌশল সম্পর্কে আগে থেকেই স্পষ্ট ধারণা ছিল। এর ফলেই তারা নির্দিষ্ট এলাকায় বোমা পুঁতে রেখে এমন ভয়াবহ প্রতিরোধের জাল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

এই বিস্ফোরণের পর গাজা উপত্যকার বাতাসে আবারও যুদ্ধের গন্ধ স্পষ্টভাবে টের পাওয়া যাচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সামরিক হাইকম্যান্ড থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনার জবাবে ‘উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া’ দেওয়া হবে। পরিস্থিতির উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বেইত হানুন এলাকাটি গাজার উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত এবং ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বর্তমানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকা সংঘাতপ্রবণ এবং অতীতেও এখানে বহুবার ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে।

এই মুহূর্তে আহত সেনাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানানো হয়েছে। তাঁদের বিভিন্ন সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে রয়েছে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও। সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে কয়েকদিনব্যাপী শোক পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গাজার পরিস্থিতি এখন ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। একদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কড়া সামরিক উপস্থিতি, অন্যদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি—সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মহলে আবারও মধ্যপ্রাচ্যের এই উত্তপ্ত ভূখণ্ড নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের কোনো দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ না থাকায়, এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫