শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিপজ্জনক সকালের খাবার: সচেতন হোন আজই

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
  • ৯ বার
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বিপজ্জনক সকালের খাবার: সচেতন হোন আজই

প্রকাশ: ২৮শে জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক
আজকের খবর অনলাই

প্রতিদিনের শুরুটা কেমন হবে, তার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সকালের খাদ্যাভ্যাস হয়ে ওঠে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ, দিনের প্রথম খাবার শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে গভীর প্রভাব ফেলে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো সকালে গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। ফলে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকে জটিল করে তোলে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এবং ডায়াবেটিস বিষয়ক সাম্প্রতিক চিকিৎসা গবেষণায় বারবার উঠে এসেছে—খালি পেটে কিংবা দিনের শুরুতে কিছু নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকায় এই ভুলগুলো আজও রয়ে গেছে, ফলে অনেকেই অজান্তেই নিজেদের জন্য ক্ষতির রাস্তা তৈরি করছেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু খাবার সম্পর্কে যেগুলো দিনের শুরুতে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে এবং তা শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ডায়াবেটিস আক্রান্ত অনেকের সকাল শুরু হয় এক কাপ চা দিয়ে। যদিও এটি একটি দীর্ঘদিনের অভ্যাস, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি মোটেই নিরাপদ নয়—বিশেষ করে যদি চায়ে দুধ ব্যবহার করা হয়। কারণ, দুধে থাকা ল্যাকটোজ অনেকের জন্য হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ল্যাকটোজ গাঁজনের মাধ্যমে অন্ত্রে গ্যাস ও ফোলাভাব সৃষ্টি করে, যার ফলশ্রুতিতে পেটের অস্বস্তি ও ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, দুধে থাকা ‘কেসিন’ নামক একপ্রকার প্রোটিন অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা হজমে বিঘ্ন ঘটিয়ে বিষাক্ত উপাদানকে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে সাহায্য করে।

একইভাবে, বাজারজাত ফলের রসও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এমন রসে প্রাকৃতিক ফাইবার থাকে না, ফলে ফলের চিনি খুব দ্রুত রক্তে মিশে যায়। এতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা আচমকা বেড়ে যায় এবং এরপর তা দ্রুত কমে আসে—একে বলা হয় ‘ব্লাড সুগার ক্র্যাশ’। এই ওঠানামা দেহে ক্লান্তি, ক্ষুধা এবং অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার প্রবণতা তৈরি করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সকালের খাবার হিসেবে অনেকেই খালি পেটে রুটি খেয়ে থাকেন, বিশেষত পরিশোধিত আটার রুটি। কিন্তু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরিশোধিত স্টার্চ খালি পেটে গ্রহণ করা হলে তা দ্রুত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়া হঠাৎ করে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণকে করে তোলে আরও কঠিন। এতে দিনের অন্যান্য খাবার হজমেও বিঘ্ন ঘটে।

এছাড়াও, ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংক বা শরীর চাঙ্গা করার পানীয়—যেগুলোকে স্বাস্থ্যবান্ধব বলে প্রচার করা হয়—তাও বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত বাজারজাত এসব পানীয়তে কৃত্রিম মিষ্টি যেমন সুক্রালোজ ব্যবহৃত হয়, যা অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। খালি পেটে এই ধরনের পানীয় গ্রহণ করলে ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তাই দিনের প্রথম খাবার বেছে নেওয়ার সময় বিশেষ সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি। খাদ্যতালিকা তৈরির আগে পরামর্শ নিতে হবে পুষ্টিবিদের, জানতে হবে কোন খাবারটি আপনার শরীরের জন্য উপযোগী। কারণ, প্রতিটি শরীর আলাদা এবং ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী নিয়ন্ত্রণযোগ্য অবস্থা, যেটি খাদ্যাভ্যাসের সঠিকতার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে।

জনসচেতনতা বাড়ানো এবং দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে রক্তে শর্করার সঠিক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। আর এই নিয়ন্ত্রণই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার চাবিকাঠি। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন এমন ব্যক্তিরাও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই সচেতনতা গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে এ রোগ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫