শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

Operation Midnight Hammer: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ভয়াবহ হামলার পর দোদুল্যমান বিশ্বের নিরাপত্তা

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
  • ৭০ বার

প্রকাশ: ২৬শে জুন’ ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

গত রাতে যখন তেহরানের ঘড়িতে মিসর পাড়ি দেয় ২টা বাজে, সেবার পুরো বিশ্ব চোখ বসিয়ে ছিল শুনশানে। রাত তখন দুইটা, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের নস্টার ঘাঁটি থেকে ছয়টি বি‑২ স্পিরিট স্টেল্থ বোমারু বিমান ধীরগতিতে আকাশে ওঠে। তাদের সাথে ছিল ১২৫টি আধুনিক ফাইটার জেট, এক বা একাধিক রিফুয়েলিং বিমান, এবং সাবমেরিন থেকে ছোড়া ৩০ টমাহক ক্রুজ মিসাইল — এ ছিল এক নজিরবিহীন সামরিক বহর। তবে এরই মধ্যে ওঠে যায় সংকেত বিভ্রান্তির কৌশল — ঘাঁটির একাংশ পশ্চিমমুখী করে অন্য বিমানকে ‘ডিকয়’ হিসাবে ছেড়ে দিয়ে মূল হামলা চালানো হয়েছিল ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার বিরুদ্ধে।

যুদ্ধের অগোচরে নামকরণ করা হয়েছিল “Operation Midnight Hammer”, যেখানে ছয়টি বি‑টু স্পিরিট বিমান ১৪টি ৩০০০০ পাউন্ডের GBU‑57 Massive Ordnance Penetrator (MOP) ‘বাংকার‑বাস্টার’ বোমা প্রয়োগ করে মাটির নিচে থাকা ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান নামক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানেছিল। এই বোমাগুলো প্রথমবারের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলো এবং ‘সিকোয়েন্সিয়াল পেনেট্রেশন’ দ্বারা একের পর এক স্তর ধ্বংসের পরিকল্পনা করা হয়।

সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা না করলেও, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, “Fordow is gone!”, এবং বলতে থাকেন, “completely obliterated,” যা হুবহু “ধ্বংস”, “নিশ্চিহ্ন” বা “বিলুপ্ত”–র সমার্থক। তবে মূল চ্যালেঞ্জ হলো—এ কি হার্ড টেকনিক নয় নাকি ভয়ঙ্কর তাৎক্ষণিক দাবি?

উপগ্রহ ইমেজ দেখা গেছে—ফরদোর পাহাড়ে ‘ডবল‑ট্যাপ’ ছিদ্র, ধোঁয়ার স্তূপ, ধ্বংসের চিহ্ন। তবে এই স্থাপনায় ইউরেনিয়াম, সেন্ট্রিফিউজ ও যন্ত্রপাতি তো সরিয়ে নিয়েছে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। বরং এই হামলা ইরানের ভূগর্ভস্থাংশে না মেরেই শুধুমাত্র উপরের অবকাঠামোর ক্ষতি করেছে—যা কোনভাবেই পারমাণবিক সক্ষমতার মূল ভিত্তিকে ধ্বংস করেনি।

রক্ষণশীল মহলের দাবি অনুযায়ী, এই হামলা ইরানে “বড় ধাক্কা”, “বহু বছরের প্রগতি সাফসা”, এবং “পারমাণবিক হাতোপড়াকে বাধা” দিয়েছে। মার্কো রুবিও সবিশেষ বলেছেন, “ইরান এখন পারমাণবিক অস্ত্র থেকে অনেক দূরে।” তবে সংযুক্ত সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কেইন স্পষ্ট করেছিলেন—এখনই বলা যাচ্ছে না; এটি শুধু ‘তীব্র ধ্বংস’; সময় দেবে চূড়ান্ত বিবেচনায়।

ইরান আত্মরক্ষায় পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চালায় ব্যালিস্টিক হামলা করা কাতারের আমেরিকান ঘাঁটিতে। যদিও তাতে কোনো প্রাণনাশ হয়নি, তবে প্রতিশোধের শাসলোচনায় ইরাযয়ের দিকে যুদ্ধের মেজাজ “কঠিন, আপাতত দৃঢ় হলেও গোপন” বলে ফাইটার বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেন। ইরানের প্রতীকী কণ্ঠ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সাংবাদিকদের মতে, “এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।”

বিশ্লেষকরাও দ্বিধায়—যতক্ষণ না ইউরেনিয়াম ও কেন্দ্রীয় যন্ত্রপাতি নিশ্চিন্তে ধ্বংস হয়, ততক্ষণ “পারমাণবিক আত্মনির্ভরতার” পথ খোলা। তবে যদি না হয়, তাহলে ইরান হয়তো বাধ্য হবে ‘গোপন শক্তি ঘাঁটি’ গড়ার তাগিদ নিয়ে; যা আধুনিক বিশ্বে ‘পারমাণবিক প্রতিরক্ষা’ সূত্রপাত ঘটাবে। এই সম্ভাবনা অর্থেই বিশ্বের জন্য এক ভয়ঙ্কর precedent–যেখানে না থাকা রাষ্ট্রগুলোই পারমাণবিক রণশক্তির উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়।

নিঃসন্দেহে Operation Midnight Hammer ইতিহাসে সবচেয়ে বড় B‑2 হামলা ছিল—যার পরিসংখ্যান, প্রযুক্তি ও প্রভাবের দিক থেকে কেউ উপেক্ষা করতে পারে না। তবে যুদ্ধের চিরন্তন প্রশ্ন ফিরে যায়—এটা কি ‘বিষফোঁড়া’ নাকি ‘বর্ষবিদ্ধিগ্ধ ধ্বনি’ ছিল? পারমাণবিক স্থায়িত্ব কেড়ে নিতে পারল কি? না শুধু ‘অস্থায়ী বিভ্রাট’?

ইরানের গোপন আশ্রয়, ইউরেনিয়ামের চালাচালান, জ্ঞানের ধারাবাহিকতা—এসব নিয়ে রয়ে গেছে পুরনো-কালের ধোঁয়াশা। শান্তি আগমন করবে, না বড় সংঘাতের বীজ রোপণ হবে—বিশ্ব এখন সেই অজানা সত্যের অপেক্ষায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫