প্রকাশ: ২৪ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
ইরানের গিলান প্রদেশে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত নয়জন নিহত এবং ত্রিশেরও বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় চারটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ঘটনার কেন্দ্রস্থল ছিল গিলানের আস্তানেহ-ইয়ে আশরাফিয়া শহর, যা সাম্প্রতিককালে উত্তেজনার মধ্যবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
গিলান গভর্নরের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে এবং মোট আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩৩ জন। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গেছে যে, নিহতদের মধ্যে ইরানের শীর্ষস্থানীয় পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহাম্মদ রেজা সিদ্দিকির নামও রয়েছে, যিনি ইরানের পারমাণবিক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।
এদিকে, ইরানি সরকারি ও গণমাধ্যম সূত্র দাবি করছে, এই হামলার পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। এই খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লেখযোগ্য যে, এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে, যা সাম্প্রতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে ধরা হচ্ছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও জানিয়েছে, তারা রাতের বেলা ইরান থেকে উৎক্ষেপিত একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় তারা তাদের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে এবং সতর্কতা না আসা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে ইরান এখনো এই হামলার দায় স্বীকার করেনি এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়েও কোনো নিশ্চিত তথ্য দেয়নি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পূর্বেই জানান, যদি ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ করে, তাহলে তেহরানও পাল্টা হামলা চালাবে না।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক চরম উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই ধরনের হামলা এবং পাল্টা পদক্ষেপের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলো কেবল স্থানীয় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চেও গভীর প্রভাব ফেলছে।
এই ঘটনার পরবর্তী প্রভাব এবং কূটনৈতিক উত্তেজনার ধারা কেমন হবে, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বাংলাদেশের মত অন্যান্য দেশেরও এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার প্রতি নজর রাখা প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
সংক্ষেপে, ইরানের গিলানে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলা একটি দুঃসহ ঘটনা যা শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল পক্ষের জন্য কূটনৈতিক সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া অত্যাবশ্যক বলে মনে করা হচ্ছে।