শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

যুদ্ধ নয়, রাজনৈতিক ভিক্ষা: সপ্তম দিনে গড়ালো ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
  • ৩৯ বার

প্রকাশ: ১৯ই জুন ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তাপ ছুঁয়ে গেছে বিশ্ব রাজনীতির কাঁপুনি—ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ এখন সপ্তম দিনে। যুদ্ধে ঢুকে প্রথমেই ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে চালিয়ে দেয় ২০০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান নিয়ে একটি প্রচণ্ড আগ্রাসী বিমান হামলা। যুক্তি দেয়—ইরান নাকি ইউরেনিয়াম মজুত করছে, ভবিষ্যতে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ করতে পারে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে মদদ দিচ্ছে। এই কারণ দেখিয়ে তারা ‘প্রতিরক্ষামূলক’ ব্যবস্থা হিসেবে যুদ্ধ শুরু করে।

শুরুতে শুনলে মনে হতে পারে, ইসরায়েলই যেন বিশ্বশান্তির চূড়ান্ত অভিভাবক। তাদের কথায়, যুদ্ধটা যেন একরকম দায়বদ্ধতা, বিশ্বকে নিরাপদ রাখার মহৎ উদ্যোগ। কিন্তু বাস্তবতা কি তেমনই? যারা ফিলিস্তিনের ভূমি পাঁচ দশক ধরে জবরদখল করে রেখেছে, যারা প্রতিনিয়ত নিরস্ত্র জনগণের উপর বোমা ফেলেছে, হত্যা করেছে শিশু, নারী, বেসামরিক নাগরিক—তাদের মুখে ‘শান্তি’র কথা শুনে যেন ইতিহাসও অপমানিত হয়।

আজ যখন ইরান একের পর এক পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে সামরিক ও কূটনৈতিক সহায়তার জন্য। এই চিত্র যেন শুধু একটি যুদ্ধ নয়—বরং এক ধরনের রাজনৈতিক দুর্বলতা প্রকাশ, এক ধরনের নীতিহীন অহংকার ভাঙার প্রক্রিয়া।

বিশ্বের বড় বড় শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যখন ইরানকে আটকাতে একত্রিত হয়, তখন একটা প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে—কেন ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি চালায়, সেটা সন্ত্রাস? অথচ ইসরায়েলের একাধিক পারমাণবিক ও রাসায়নিক অস্ত্র মজুত থাকাটা ‘আত্মরক্ষা’? কী বিচারে এক পক্ষের শক্তি অপরাধ আর অন্য পক্ষের শক্তি বৈধতা?

এই প্রশ্নগুলো আর শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের নয়—এটা এখন মানবিক ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। ইসরায়েলের দীর্ঘ দিনের দখলদারিত্ব ও নিপীড়নমূলক নীতির কোনো বিচার নেই, অথচ সম্ভাব্য এক কর্মসূচির আশঙ্কায় ইরানকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এটা কি কেবল নিরাপত্তা-নীতি? নাকি বৈশ্বিক রাজনীতিতে একচেটিয়া ক্ষমতা ধরে রাখার প্রক্রিয়া?

বিশ্ব এখন এক অস্বস্তিকর নৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাস দমনের নামে একপক্ষের সহিংসতাকে বৈধতা দিয়ে অন্য পক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। যদি সত্যিই পৃথিবীকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে হয়, তবে আগে দরকার সৎ আত্মসমালোচনা—নিজের আয়নায় নিজেকে দেখা।

ইসরায়েল যদি চায়, বিশ্বটা ন্যায়ভিত্তিক হোক, তাহলে তাকে নিজের ইতিহাসের দিকে তাকাতে হবে। আজকের দিনে যারা যুদ্ধের জন্য ‘সঠিক’ ও ‘ভুল’ নির্ধারণ করছে, তাদের উচিত একই মানদণ্ডে উভয় পক্ষকে বিচার করা। শুধু ইরান নয়, ফিলিস্তিনের কান্নাও আজ বিচারের দাবি রাখে।

এই যুদ্ধ কবে থামবে তা এখনো অনিশ্চিত। কিন্তু এই যুদ্ধ একটা প্রশ্ন রেখে যাচ্ছে—এই সভ্যতার আসল সংকট কি বোমা, না বিবেকের নিস্তব্ধতা?

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫