প্রকাশ: ১৯ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তবে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে তিনি যুদ্ধ বা সামরিক পদক্ষেপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করতে পছন্দ করেন না। বরং কাজ শুরুর এক মিনিট আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষপাতী তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিতে পছন্দ করি একেবারে শেষ মুহূর্তে। বিশেষ করে যুদ্ধের মতো ক্ষেত্রে, যেখানে পরিস্থিতি মুহূর্তেই এক চরম অবস্থা থেকে অন্য এক চরম অবস্থায় পৌঁছাতে পারে।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট যে, যুদ্ধের প্রশ্নে দ্রুত বদলে যাওয়া বাস্তবতার কারণে তিনি অনেকটা অপেক্ষা করে চলার কৌশল অবলম্বন করছেন।
বর্তমানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কেন্দ্রে রয়েছে ফোর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র, যা একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং বহিরাগত হামলা থেকে রক্ষার জন্য বিশেষভাবে সুরক্ষিত। ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের স্থাপনা ধ্বংস করতে হলে সাধারণ বোমা দিয়ে হবে না, প্রয়োজন হবে অত্যন্ত শক্তিশালী বাঙ্কারবাস্টার ধরনের বোমা।
ট্রাম্পের মন্তব্য অনুযায়ী, তিনি এই মুহূর্তে সরাসরি সামরিক অভিযান চালাতে চাইছেন না, বরং ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে কোনো পরিবর্তন আসে কি না, তা কিছুটা সময় নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে চান। প্রেসিডেন্ট বলেন, “আগামী সপ্তাহটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, আবার তার চেয়েও আগে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি।”
ইরানও এই পরিস্থিতিতে চুপ নেই। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না এবং কোনো সামরিক আগ্রাসনের পরিণতি হবে ভয়াবহ ও অপূরণীয়। খামেনির মতে, যারা ইরানের ইতিহাস জানে, তারা দেশটিতে আগ্রাসনের চিন্তাও করতে পারে না।
এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষের বক্তব্য ও অবস্থান থেকে স্পষ্ট যে, উভয়ই নিজেদের অবস্থানে অনড় এবং কোনো পক্ষ আপসের ইঙ্গিত দিচ্ছে না। ফলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত যে কোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে—এমন শঙ্কাই এখন সবার মধ্যে প্রবলভাবে বিদ্যমান। আন্তর্জাতিক কূটনীতির চাপে এই উত্তেজনা প্রশমিত হয় কি না, তা এখন সময়ই বলে দেবে।