ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল এয়ার ইন্ডিয়ার এক ফ্লাইটে। এবার থাইল্যান্ড থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ছড়িয়ে পড়ে বোমাতঙ্ক, যার জেরে মাঝ আকাশ থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হয় বিমানটি এবং জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করা হয় থাইল্যান্ডের ফুকেট বিমানবন্দরে। এই ঘটনাটি নতুন করে এয়ার ইন্ডিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলেছে এবং যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং থাইল্যান্ডের ফুকেট বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এয়ার ইন্ডিয়ার AI 379 ফ্লাইটটি শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে থাইল্যান্ডের ফুকেট থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। বিমানে মোট ১৫৬ জন যাত্রী ছিলেন। ফ্লাইটটি আকাশে ওড়ার কিছু সময় পরই বিমানের অভ্যন্তরে বোমা থাকার সন্দেহের খবর ছড়িয়ে পড়ে, যা তৎক্ষণাৎ পাইলটদের মধ্যে চরম সতর্কতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করে।
পাইলটরা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে ফ্লাইট কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানটিকে ফের থাইল্যান্ডের দিকেই ঘুরিয়ে দেন। ফুকেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুত এবং নিরাপদে অবতরণ করানো হয় ফ্লাইটটিকে। জরুরি অবতরণের পরপরই যাত্রীদের বিমানের ভেতর থেকে বের করে আনা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখা হয়।
ফুকেট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে বিমানটি ফুকেট থেকে রওনা দিয়েছিল। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে একটি সম্ভাব্য বোমা হুমকির বার্তা পৌঁছায়। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের অনুমতি নিয়ে দ্রুত অবতরণ করানো হয় বিমানটিকে।
পরবর্তীতে গোটা ফ্লাইটটি ঘিরে ফেলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী বিশেষ বাহিনী। যাত্রীদের লাগেজ ও কেবিন সম্পূর্ণরূপে তল্লাশি করা হয়। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালানোর পর নিশ্চিত হওয়া যায়, বিমানটিতে কোনো ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য বা বোমার অস্তিত্ব নেই। ফলে আতঙ্কের অবসান ঘটে এবং যাত্রীদের আবার ফ্লাইটে চড়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
তবে এয়ারপোর্টস অব থাইল্যান্ড (AOT) কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো এখনো পর্যন্ত বোমা হুমকির সূত্র বা সম্ভাব্য উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর যাত্রীদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছেন এবং বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বিশেষ করে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও হুমকি মোকাবিলার সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।