শিরোনাম :
ইরানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চায় ইসরায়েল: প্রতিবেদন তেহরানের হৃদয়ে অপারেশন: ইরানের গভীরে ইসরায়েলের নিখুঁত হামলার পেছনের গোয়েন্দা কৌশল উদ্ঘাটন হাইফা বন্দরে ইরানের হামলা: মোদির আদানি খাতায় ‘আগ্নেয়’ ক্ষতির হিসাব শুরু! ১৪ বছরের জর্জ স্টিন্নি: ইতিহাসের নৃশংস বিচারবিভাগীয় হত্যাকাণ্ড ইরান দাবি করল ১৩টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত: যুদ্ধক্ষেত্রের পাল্টা ভারসাম্য না কি মধ্যপ্রাচ্যীয় ভূরাজনীতির নতুন মোড়? মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ-ভূমিতে ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষ: কূটনৈতিক চাপ, সামরিক বাস্তবতা ও বাংলাদেশের করণীয় সিলেটে উপদেষ্টা বহর আটকে ক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভ দেশে ফিরলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ও অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক ঘিরে ভূরাজনৈতিক বার্তা: ভারতের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কা ও আঞ্চলিক সমীকরণে নতুন মোড় ইরানের সেনাপতি বাঘেরির হত্যাকাণ্ড: মধ্যপ্রাচ্যে বিস্ফোরণমুখী উত্তেজনা, বিশ্ব কি বৃহৎ যুদ্ধে ধাবিত হচ্ছে?

টাটা গোষ্ঠীর ঘোষণা, নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হবে ১ কোটি রুপি করে সাহায্য

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫
  • ৬ বার
টাটা গোষ্ঠীর ঘোষণা, নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হবে ১ কোটি রুপি করে সাহায্য

প্রকাশ: ১৩ জুন, ২০২৫ • আজকের খবর ডেস্ক

ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদে গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে টাটা গোষ্ঠী। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে, দুর্ঘটনায় নিহত প্রতিটি ব্যক্তির পরিবারকে এক কোটি রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারা।

টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন. চন্দ্রশেখরণ এক বিবৃতিতে জানান, এই দুর্যোগপূর্ণ ঘটনার অভিঘাত ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “যা ঘটেছে, তার জন্য কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়। আমরা নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাচ্ছি। প্রার্থনা করছি সবার জন্য।” তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যা যা করা প্রয়োজন, টাটা গোষ্ঠী তার সবটুকু করবে। এর অংশ হিসেবে দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসটি পুনর্নির্মাণেও আর্থিক সহায়তা দেবে সংস্থাটি।

ঘটনার দিন দুপুরে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র পাঁচ মিনিট পরই লন্ডনগামী বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যার মধ্যে ২৩০ জন ছিলেন যাত্রী এবং ১২ জন বিমানকর্মী। উড্ডয়নের কিছু সময় পরেই বিমানটি আচমকা ভারসাম্য হারিয়ে বাঁদিকে হেলে পড়ে এবং দ্রুত নিচের দিকে নেমে আসে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানের লেজের অংশ নিচের দিকে নামতে নামতে হঠাৎ করে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বিমানবন্দর চত্বরের পাশেই অবস্থিত মেঘানিনগর এলাকায়। এতে বিস্ফোরণের সৃষ্টি হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের একটি বহুতল ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ, যাদের চিকিৎসা চলছে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে। প্রশাসন জানিয়েছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দুর্ঘটনার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় লিখেছেন, “আহমেদাবাদের বিপর্যয়ে আমি মর্মাহত, দুঃখিত। এই বেদনা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আমি তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে উদ্ধার কার্যক্রমের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আমি শোকাহত। আমি দ্রুত উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দুর্ঘটনাস্থলে ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে।

এই দুর্ঘটনা গোটা ভারতজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। সংবাদমাধ্যমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর করুণ পরিস্থিতি তুলে ধরছে। অনেকেই তাদের প্রিয়জন হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ, সামাজিক সংগঠন এবং রাজনীতিকরা দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

টাটা গোষ্ঠীর এই মানবিক পদক্ষেপে অনেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, এই সহায়তা যদিও হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের ফিরিয়ে দিতে পারবে না, তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনরুদ্ধার ও নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। একই সঙ্গে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি উঠেছে সর্বত্র, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।

এই বিমান দুর্ঘটনা শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে হাজারো মানুষের কান্নার উৎস, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতির প্রতিচ্ছবি এবং প্রশাসনিক তৎপরতার এক কঠিন পরীক্ষা। ভারতের ইতিহাসে আরও একটি শোকাবহ দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রইল ১২ জুন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫