প্রকাশ: ২৭শে জুন ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতা ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের পর্দা নামার সঙ্গে সঙ্গেই নিশ্চিত হয়ে গেছে শেষ ষোলো পর্বের লাইনআপ। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এবারের আয়োজনে প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে এই টুর্নামেন্ট শুরু হয়, যা বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গ্রুপ পর্বে ঘটে গেছে একের পর এক নাটকীয়তা, উত্থান-পতনের উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচগুলো এখন ইতিহাস হলেও সামনে অপেক্ষা করছে আরও রোমাঞ্চকর ও টানটান উত্তেজনার নক আউট পর্ব।
এই প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপ এমন এক ফরম্যাটে আয়োজন করা হয়েছে যেখানে অংশগ্রহণ করেছে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকার শীর্ষ ক্লাবগুলো। পোর্তো ও আল আহলির ৪-৪ গোলের ম্যাচটি যেমন ছিল টুর্নামেন্টের অন্যতম রোমাঞ্চকর মুহূর্ত, তেমনি বায়ার্ন মিউনিখের ১০-০ গোলে অকল্যান্ড সিটিকে উড়িয়ে দেওয়াও ফুটবলবিশ্বকে দিয়েছে নতুন করে আলোচনার খোরাক। তবে এবার মূল লড়াই শুরু হচ্ছে—শেষ ষোলোতে। যেখানে প্রতিটি ম্যাচই হবে বাঁচা-মরার লড়াই, ভুলের কোনো সুযোগ নেই।
এই নকআউট পর্বে একদিকে যেমন দেখা যাবে ইউরোপিয়ান জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি কিংবা জুভেন্টাসের মতো দলগুলোকে, অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসছে দক্ষিণ আমেরিকার রোমাঞ্চকর ক্লাব পালমেইরাস, ফ্লামেঙ্গো, বোতাফোগো ও ফ্লুমিনেন্স। এই তালিকায় আছেন এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন আল হিলাল এবং উত্তর আমেরিকার মন্টেরে ও ইন্টার মিয়ামির মতো উদীয়মান শক্তিরাও।
বিশ্বব্যাপী আলোচিত ইন্টার মিয়ামি ও পিএসজির মধ্যকার ম্যাচ ইতিমধ্যেই সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ম্যাচগুলোর একটি হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যেখানে একপাশে আছেন মেসি, অপরদিকে কিলিয়ান এমবাপে। একইভাবে বেনফিকা বনাম চেলসি কিংবা রিয়াল মাদ্রিদ বনাম জুভেন্টাসের মতো ম্যাচগুলোও ফুটবলপ্রেমীদের দৃষ্টি আটকে রেখেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা এই ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে। লিঙ্কন ফাইন্যান্সিয়াল ফিল্ড, হার্ড রক স্টেডিয়াম, মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়াম কিংবা ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামের মতো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভেন্যুগুলো প্রস্তুত রয়েছে এই মহারণের জন্য।
প্রত্যেকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে ডাজন (DAZN) নেটওয়ার্ক, যা বিশ্বের নানা প্রান্তের দর্শকদের কাছে সহজলভ্য। পাশাপাশি ইউরোপ ও আমেরিকার টিভি চ্যানেলগুলোতেও টিএনটি স্পোর্টস ও ইউরোস্পোর্টের মাধ্যমে নির্বাচিত ম্যাচগুলো সরাসরি দেখা যাবে। ডিজিটাল যুগে এই সম্প্রচারের সহজলভ্যতা বিশ্বজুড়ে ক্লাব ফুটবলের এই মহাযজ্ঞকে আরও বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দিয়েছে।
শেষ ষোলো মানেই নতুন গল্প, নতুন প্রত্যাশা। এখান থেকে শুরু হবে সেই যাত্রা, যা শেষ পর্যন্ত কাউকে নিয়ে যাবে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে। বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলো এবং তাতেই খেলা বিশ্বের সেরা তারকারা যখন একসঙ্গে মাঠে নামেন, তখন শুধু গোল নয়, জন্ম নেয় ইতিহাস। এই ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলো তাই কেবল এক পর্ব নয়—এ যেন নতুন এক উৎসবের শুরু। ফুটবলপ্রেমীরা প্রস্তুত, এবার শুধু অপেক্ষা ম্যাচ শুরু হওয়ার।