শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

৮০ বছর আগের ইতিহাস পুনরাবৃত্তি—সমুদ্রপথেই পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫
  • ৩৭ বার

প্রকাশ: ২০শে জুন ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

মধ্যপ্রাচ্য যখন এক রক্তাক্ত সংঘাতের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন ইতিহাস যেন আবারও নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েলজুড়ে চলমান ইরানি স্ট্র্যাটেজিক হামলা ও গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ সংঘর্ষের মধ্যে ইসরায়েলের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে এক অসীম ভয়ের ছায়া। এই ভয়, এই আতঙ্ক—শুধু তাৎক্ষণিক ক্ষতির জন্য নয়; বরং একটি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা এখন বাস্তবতার কাছাকাছি।

যে পথে তারা ১৯৪৮ সালে এই অঞ্চলে এসেছিল—সেই পথেই যেন আবার ফিরে যাচ্ছে তারা। তেল আবিব, হাইফা ও আশদোদের বন্দর এলাকা এখন অস্থির। উপকূলজুড়ে ভিড় জমিয়েছে শত শত উদ্বিগ্ন মানুষ, যারা ছোট নৌকা, প্রাইভেট জাহাজ, এমনকি মৎস্যজীবীদের ট্রলার ব্যবহার করে পালিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সমুদ্রপথে ইসরায়েলিরা প্রথমে সাইপ্রাসের দিকে ছুটছে। সেখান থেকে অনেকে গ্রিস, ইতালি, ফ্রান্স, এমনকি জার্মানির দিকে রওনা দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোও জানিয়েছে, সাইপ্রাসে ইতোমধ্যেই কয়েক হাজার ইসরায়েলি আশ্রয়প্রার্থী পৌঁছেছে।
বিমানবন্দরগুলো কার্যত অচল হয়ে যাওয়ার পর সমুদ্রপথই এখন তাদের একমাত্র ভরসা। এই দৃশ্য দেখে অনেকেই বলছেন—ইতিহাস যেন ৮০ বছর পরে ঠিক একই ভাবে নিজেকে পুনরাবৃত্তি করছে।

১৯৪৮ সালে যখন প্রথম ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন ইউরোপের নানা প্রান্ত থেকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত প্যালেস্টাইনে পাড়ি জমিয়েছিল হাজার হাজার ইহুদি অভিবাসী। সেই যাত্রার সিংহভাগই হয়েছিল সমুদ্রপথে। আজ আবার সেই পথেই তারা ফিরে যাচ্ছে—তবে এবার আর স্বপ্ন নিয়ে নয়, বরং এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায়।

এমন বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও ইতিহাসবিদরা বলছেন, ‘এটি কেবল একটি সামরিক সংঘর্ষ নয়, এটি একটি রাষ্ট্রীয় অস্তিত্বের সংকট।’ যুদ্ধের রাজনীতি, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ, বা আঞ্চলিক আধিপত্যের বাইরে—এই পরিস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, দখল ও দমননীতি কখনোই স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না।

ইসরায়েলের বর্তমান পরিস্থিতি কেবল সামরিক বা রাজনৈতিক নয়—এটি একটি নৈতিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। যারা বছরের পর বছর ফিলিস্তিনের জনগণকে ঘরছাড়া করেছে, তাদের ওপর দমন চালিয়েছে, তারা আজ নিজেরাই সেই ইতিহাসের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে।

ইতিহাসের এই বৃত্তাকার পরিণতির মধ্য দিয়ে একটাই প্রশ্ন সামনে আসে—এই কি সেই ‘অজেয় রাষ্ট্র’ ইসরায়েল, যার অস্তিত্বে আঘাত কখনো কেউ কল্পনা করেনি? নাকি এটি সেই পরিণতি, যা ৭০ বছর ধরে অন্যদের উপর চাপিয়ে দেয়া নিপীড়নের প্রকৃত প্রতিফলন?

বিশ্বজুড়ে মুসলিম বিশ্ব থেকে শুরু করে নিরপেক্ষ মানবতাবাদী শক্তিগুলোর চোখ আজ ইসরায়েলের এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে নিবদ্ধ। এবং অনেকেই বলছেন—এটি হয়তো কোনো যুদ্ধের শেষ নয়, বরং অন্যায় ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের এক নতুন ইতিহাসের সূচনা।

ইতিহাস ফিরে আসে। তবে এবার তা হয়তো আরো গর্জে উঠেই এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫