শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

বয়স বাড়ার সাথে সাথে সুস্থ থাকার উপায় জানুন

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ১২ বার
বয়স বাড়লেও সুস্থ থাকুন, জানুন কিভাবে

প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা সমস্যার আবির্ভাব ঘটে, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে কঠিন করে তোলে। হাঁটুতে ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে গেলে হাঁপিয়ে ওঠা, বা একটু এদিক-ওদিক খাওয়ার পরই বদহজমের সমস্যা—এসব বয়সজনিত লক্ষণ অনেকের কাছেই পরিচিত। কারো কারো ক্ষেত্রে চল্লিশ পেরোতেই ধরা পড়ে ডায়াবেটিস, থাইরয়েড বা উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ। আবার পঞ্চাশের কাছাকাছি এসে অনেকে বাতের যন্ত্রণায় ভুগতে শুরু করেন। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, কিছু মানুষ আশি বছর পেরিয়েও দিব্যি হাঁটাচলা করেন, যেন ব্যথা-বেদনা তাঁদের ধারেকাছে নেই। এই পার্থক্যের পেছনে রয়েছে জীবনযাত্রার সঠিক অভ্যাস এবং পুষ্টিকর খাদ্যের সঠিক ব্যবহার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে শরীরের দুর্বলতা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে সঠিক পুষ্টি ও জীবনযাত্রার মাধ্যমে এই দুর্বলতাকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পুষ্টিবিদ ও ফিটনেস কোচ লিউক কুটিনহো, যিনি বহু বছর ধরে বয়স্কদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন, জানাচ্ছেন যে সুস্থ থাকার জন্য দামি সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন নেই। আমাদের রান্নাঘরে থাকা দুটি পরিচিত উপাদান—সাদা ও কালো তিল—হতে পারে স্বাস্থ্য রক্ষার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।

সাদা ও কালো তিল কেন এত উপকারী? এই ছোট্ট বীজ দুটিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই উপাদানগুলো শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয় এবং বয়সজনিত সমস্যাগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করে। তিলের উপকারিতা শুধুমাত্র পুষ্টিগুণেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রথমত, তিল হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফসফরাস বয়সজনিত হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। হাঁটু বা কোমরের ব্যথায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত তিল খাওয়া একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, নিয়মিত তিলের ব্যবহার হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে এবং বাতজনিত সমস্যা কমাতে সহায়ক।

দ্বিতীয়ত, তিল মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিভ্রংশ, একাগ্রতার অভাব বা মানসিক ক্লান্তির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তিলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং মানসিক সতেজতা ধরে রাখতে কার্যকর।

হজমশক্তির জন্যও তিল অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ফাইবার বদহজম, পেট ফাঁপা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত তিল খাওয়ার ফলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। এটি বয়স্কদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে হজমশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে তিলের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। তিলে থাকা লিগন্যান্স, ফাইটোস্টেরল এবং হেলদি ফ্যাট রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। নিয়মিত তিল খাওয়ার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব, যা বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষ করে নারীদের জন্য তিলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা। তিলে থাকা ফাইটোইস্ট্রোজেন রজোনিবৃত্তির আগে এবং পরে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। এটি মহিলাদের মধ্যে হরমোনজনিত সমস্যা কমাতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে কার্যকর।

কীভাবে খাবেন সাদা ও কালো তিল? পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, সাদা ও কালো তিল সমপরিমাণে মিশিয়ে শুকনো অবস্থায় গুঁড়া করে নিতে হবে। ভেজে নিলে তিলের কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে, তাই শুকনো গুঁড়া করাই ভালো। এই গুঁড়া স্মুদি, স্যুপ বা তরকারিতে মিশিয়ে সহজেই খাওয়া যায়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা তিলের গুঁড়া কাঁচা হলুদের সঙ্গে বেটে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। এটি হজমশক্তি উন্নত করতে এবং পেটের সমস্যা দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকর।

তবে পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, তিলের পুষ্টিগুণ অনেক হলেও দিনে দুই চামচের বেশি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত তিল খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে, তাই পরিমিত খাওয়া জরুরি। এছাড়াও, যাদের তিলে অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের এটি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জীবনভর সুস্থ থাকার জন্য কোনো সুপারফুড বা দামি ওষুধের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু সচেতনতা এবং দৈনন্দিন খাদ্যে পুষ্টিকর উপাদানের সঠিক ব্যবহার। রান্নাঘরে থাকা সাধারণ এই দুটি বীজ—সাদা ও কালো তিল—বয়সজনিত নানা সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এটি শুধু শরীরের জন্যই নয়, মনের জন্যও সতেজতা নিয়ে আসে। তাই আজ থেকেই আপনার খাদ্যতালিকায় সাদা ও কালো তিল যোগ করুন এবং বয়স বাড়লেও সুস্থ ও সক্রিয় জীবন উপভোগ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫