প্রকাশ: ০৪ জুন’ ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট, যা আগামী ২২ জুন জাতীয় সংসদে পাস হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ৪ জুন (বুধবার) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
বাজেট পাসের সময়সীমা নিশ্চিত করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ঈদুল আজহার ছুটির পর বাজেট নিয়ে আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করা হবে। তিনি আরও জানান, সকল পক্ষের মতামত, প্রস্তাব ও প্রতিক্রিয়া যাচাই-বাছাই করে ২২ জুন জাতীয় বাজেট চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হবে। এটি চলতি অর্থবছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি ছুটি। এই ছুটি টানা ১০ দিন পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও অর্থনীতিতে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ছুটির মধ্যেও অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং আর্থিক গতিশীলতা ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সরকার গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা। বাজেটের মোট প্রস্তাবিত আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের মূল বাজেট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এই বাজেট অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে প্রস্তুত হওয়া এবং অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে উত্থাপিত প্রথম বাজেট। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যেখানে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় সরকার দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।
এই বাজেটকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও অর্থ উপদেষ্টার মতে, এটি বাস্তবমুখী ও ভারসাম্যপূর্ণ একটি বাজেট, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পুনর্গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বাজেট পাসের পর নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিশদ আলোচনা ও পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে এর প্রয়োগের রূপরেখা আরও স্পষ্ট হবে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এই মুহূর্তে সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে ২২ জুনের মধ্যে বাজেট পাস নিশ্চিত করা এবং নির্ধারিত সময়েই অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন শুরু করা।