শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

হারানো জমি ফিরে পাওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ: ১৩৭ বছর পরও আপনার হক ফিরে আসতে পারে

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ৩০ বার
হারানো জমি ফিরে পাওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ: ১৩৭ বছর পরও আপনার হক ফিরে আসতে পারে

প্রকাশ: ১৭ই জুন ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন একটি আইন প্রণীত হয়েছে যা সাধারণ মানুষের জমির অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এখন বাস্তবায়নের পথে। এই আইনটি কেবল একটি আইনি দলিল নয়, এটি হাজারো পরিবারের জন্য একটি আশার নাম, একটি অপেক্ষার অবসান।

বছরের পর বছর ধরে দেশের নানা প্রান্তে লক্ষাধিক মানুষ জমি হারিয়েছেন। কেউ প্রতারণার শিকার হয়ে, কেউবা পৈতৃক সম্পত্তি সম্পর্কে সঠিক কাগজ না থাকার কারণে। আবার অনেকেই একসময় জমির দখলে ছিলেন, কিন্তু নথিপত্র হারিয়ে ফেলার কারণে আজ তাদের সেই জমিতে নেই কোনো অধিকার। কিন্তু এবার সব বদলে যেতে শুরু করেছে।

এই আইন অনুযায়ী, এমনকি ১৩৭ বছর আগে—অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলে রেকর্ডভুক্ত হওয়া জমির ওপরও মালিকানা দাবি করা যাবে, যদি প্রমাণপত্রের মধ্যে অন্তত একটি দাখিল করা যায়। এই চারটি প্রমাণের মধ্যে যে কোনো একটি থাকলেই জমি ফেরত পাওয়ার দাবি করা সম্ভব।

যেমন, যদি কারও কাছে সিএস খতিয়ান থাকে—যেখানে রায়তি স্থিতিবান হিসেবে পূর্বপুরুষের নাম রয়েছে, এবং যদি সেই পূর্বপুরুষ কোনো দলিলের মাধ্যমে জমি হস্তান্তর করেননি, তাহলে এই খতিয়ানই যথেষ্ট প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তেমনি, কারও কাছে যদি রেজিস্ট্রিকৃত দলিল থাকে বা ওয়ারিশিয়ান সনদ থাকে, তা হলেই তিনি আইনের দৃষ্টিতে নিজের জমির অধিকার ফেরত পেতে পারেন। এমনকি আদালতের কোনো রায় থাকলেও তা এই আইনের অধীনে কার্যকর হবে।

নতুন আইনে এক যুগান্তকারী দিক যুক্ত হয়েছে—তামাদি আইনের ২৮ ধারা, যা জমির মালিকানা হস্তান্তরের জন্য ১২ বা ২০ বছরের দখলকালকে ভিত্তি করে বিবেচনা করত, সেটি কার্যত বাতিল হয়ে গেছে। এখন আর কেউ বহু বছর ধরে জমি দখল করে রাখলেই মালিক বনে যেতে পারবে না।

আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যাঁদের নামে সর্বশেষ খতিয়ান আছে এবং যারা জমির দখলে আছেন, তাঁদের আদালতের অনুমতি ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না। এতে ভূমিদস্যুতা বা জাল দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের যে প্রবণতা ছিল, তা অনেকাংশে বন্ধ হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এই আইনের মাধ্যমে জমি ফেরত পাওয়ার জন্য যেটি করতে হবে, তা হলো যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহ করে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করা এবং আদালতের রায়ের ভিত্তিতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমির দখল পুনঃপ্রাপ্তির আবেদন করা। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, জেলা প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় দখল হস্তান্তর নিশ্চিত করা হবে।

এটি শুধু আইনগত পরিবর্তন নয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের একটি মাইলফলক। হাজার হাজার পরিবার, যারা একসময় নিজেদের সম্পত্তি হারিয়ে বসেছিলেন, এখন আইনের সহায়তায় নিজেদের পৈতৃক জমি ফিরে পাওয়ার আশায় বুক বাঁধতে পারছেন।

সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, আইনজীবী এবং মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন—আইনটি যদি যথাযথভাবে মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। জমির প্রতি মানুষের আস্থা যেমন ফিরে আসবে, তেমনি ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিনের পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধ অনেকাংশে কমে আসবে।

সত্যিই, ১৩৭ বছর পরেও কোনো জমি ফিরে পাওয়া এই দেশের আইনি ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। এটি প্রমাণ করে, ন্যায়বিচার কখনও মরে না—শুধু অপেক্ষা করে একটি সঠিক সময়, একটি সঠিক আইনের।

আপনার জমি কি বেদখল?
আপনার দাদার-পরদাদার খতিয়ান কি এখনো পুরনো আলমারিতে পড়ে আছে?
তাহলে এখনই সময়, এগিয়ে যান, আইন আপনার পক্ষে।
দেশ বদলাচ্ছে—আপনিও ফিরে পান আপনার ন্যায্য অধিকার।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫