প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
বলিউডের আলোচিত জুটিগুলোর মধ্যে সম্প্রতি অন্যতম হয়ে উঠেছে শ্রদ্ধা কাপুর ও লেখক-পরিচালক রাহুল মোদির সম্পর্ক। ‘তু ঝুঠি ম্যায় মক্কার’ সিনেমায় একসঙ্গে কাজের সূত্রে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠতা এখন রীতিমতো বিনোদন অঙ্গনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যদিও দুই তারকা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি, তবুও তাদের একান্ত মুহূর্তগুলোর ছবি ও ভিডিও বারবার প্রমাণ করে দিয়েছে, তারা যে কেবল পেশাগত নয়, ব্যক্তিগতভাবেও খুব কাছাকাছি।
সম্প্রতি সেই সম্পর্ক আরও একধাপ সামনে আসে এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে। ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে মাঝ আকাশে, একটি বিমানের ভেতরে। সেখানে দেখা যায়, শ্রদ্ধা কাপুর ও রাহুল মোদি পাশাপাশি বসে রয়েছেন, দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলাপ চলছে। শ্রদ্ধা ফোনে কিছু দেখাচ্ছেন রাহুলকে, আর তারা পুরোপুরি নিজেদের জগতে মগ্ন। ভিডিওটি ধারণ করেছে বিমানে থাকা কোনো যাত্রী বা ক্রু, গোপনে—তাদের অনুমতি ছাড়াই।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ এটিকে তারকাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তে উঁকি দেওয়ার দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এমন দৃশ্য প্রকাশকে ‘জনস্বার্থে তথ্য’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। তবে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন আরেক বলিউড অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডন। তিনি খোলাখুলিভাবে ভিডিওটির প্রতিবাদ জানিয়ে গোপনীয়তার প্রশ্ন তোলেন।
রাভিনা ভিডিওটির মন্তব্য ঘরে গিয়ে লেখেন, “এটা তো একেবারে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন। কোনো তারকা বিমানে ভ্রমণ করছেন বলেই তাকে গোপনে ক্যামেরাবন্দি করা যাবে—এমন কোনো নীতিমালা নেই। এমনটা করাটা একেবারেই অনুচিত। বিমানের ক্রুদের বিষয়টি জানা উচিত ছিল—অনুমতি ছাড়া এমন ভিডিও করা ও ছড়ানো অসভ্যতা।”
রাভিনার মন্তব্যের পর বিষয়টি আরও গম্ভীর মোড় নেয়। নেটিজেনদের একটি বড় অংশ তাঁর বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারা বলছে, একজন তারকা হলেও কেউই তার ব্যক্তিগত পরিসর হারায় না, বিশেষ করে বিমান বা রেস্টুরেন্টের মতো জায়গায়। তাদের সম্মান ও গোপনীয়তা রক্ষা করা ন্যূনতম সামাজিক দায়িত্ব।
অন্যদিকে, শ্রদ্ধা কাপুর ও রাহুল মোদি তাদের সম্পর্ক নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি। তবে গত বছর আম্বানি পরিবারের এক বিবাহ অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা যাওয়ার পর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়। তারকাদম্পতির মতো করে উপস্থিত হওয়া, পার্টি ও ভ্রমণে জুটি হয়ে যাওয়ার সূত্র ধরেই মিডিয়া জগতে তাদের নিয়ে খবর ছড়াতে থাকে। আর এই মাঝ আকাশের মুহূর্তটি যেন সেই গুঞ্জনে নতুন মাত্রা যুক্ত করলো।
রাহুল মোদি বলিউডে মূলত পরিচিত হয়েছেন ‘সোনু কে টিটু কি সুইটি’, ‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা’ এবং সর্বশেষ ‘তু ঝুঠি ম্যায় মক্কার’ মতো হিট সিনেমার জন্য। একজন লেখক ও নির্মাতা হিসেবে তিনি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। অপরদিকে শ্রদ্ধা কাপুর বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যিনি তার অভিনয়, সৌন্দর্য ও স্টাইলের জন্য বরাবরই শিরোনামে থাকেন।
ঘটনার নৈতিক ও সামাজিক দিক নিয়ে এখন বলিউডের অনেকেই মুখ খুলছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও মুহূর্ত নিয়ে যেভাবে মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যম তৎপর হয়ে পড়ে, সেটি কেবল তারকাদের নয়, সাধারণ নাগরিকদের জীবনেও গোপনীয়তা সংকট তৈরি করতে পারে—এই বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই ঘটনার পর কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, কিংবা শ্রদ্ধা-রাহুল নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করেন কিনা, তা এখন দেখার বিষয়। তবে এটুকু পরিষ্কার—প্রেমের সম্পর্ক যেমন মানুষের কৌতূহলের বিষয়, তেমনই তা প্রাপ্য সম্মান ও গোপনীয়তারও দাবি রাখে। মাঝ আকাশের এই মুহূর্ত এখন বলিউডে প্রেম ও নৈতিকতার আলোচনায় এক অনন্য নজির হয়ে রয়ে গেল।