শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

১১ মাসেও দৃশ্যমান নয় গণহত্যার বিচার: মাদারীপুরে জাগপার পথসভায় ক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৮২ বার
১১ মাসেও দৃশ্যমান নয় গণহত্যার বিচার: মাদারীপুরে জাগপার পথসভায় ক্ষোভ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | আজকের খবর অনলাইন

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক অস্থির ও উত্তেজনাপূর্ণ বাস্তবতায়, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সম্প্রতি একটি কার্যকর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশব্যাপী গণহত্যার বিচার দাবি এবং ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার আহ্বান। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার মাদারীপুরে আয়োজিত এক গণসংযোগ ও পথসভায় জাগপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান এক উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের ১১ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত হাজারো শহীদের আত্মাহুতি ও গণহত্যার সুনির্দিষ্ট বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয়নি।

তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ আজও নীরবে কাঁদছে। অথচ বর্তমান সরকার এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার ওপর গভীর প্রশ্ন তুলছে। আর সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজও দিল্লিতে রাজকীয় মর্যাদায় অবস্থান করছেন—যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য অপমানজনক।”

পথসভায় তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার সহযোগীরা আজো বুক ফুলিয়ে হাসছে, গণহত্যার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে।” বক্তৃতায় তিনি সরকারের ওপর জাতির প্রত্যাশা পূরণে চরম ব্যর্থতার অভিযোগ আনেন এবং বলেন, “হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার যদি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জাতি আর কতদিন অপেক্ষা করবে?”

এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জাগপার সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান জানান, তারা ৬ আগস্ট রাজধানীর ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন। তিনি বলেন, “খুনি হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লি সরকারের ওপর যথাযথ কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জনগণ এই ব্যর্থতা মেনে নিচ্ছে না।”

রাশেদ প্রধান আরও বলেন, “শেখ পরিবারের একজন সদস্যকেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। গণহত্যার বিচার করা হয়নি, আওয়ামী লীগ নামক সন্ত্রাসী রাজনৈতিক সংগঠনের বিচার শুরু করা হয়নি। সময় এসেছে দেশবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হোক।”

উল্লেখ্য, এ কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশজুড়ে মাসব্যাপী গণসংযোগ, পথসভা এবং লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জাগপা। ৮ জুলাই ছিল এই ধারাবাহিক কর্মসূচির অষ্টম দিন, যা মাদারীপুরে পালিত হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান—বাস টার্মিনাল, আদালত চত্বর ও ইটেরপুল এলাকায় গণসংযোগ চালায় দলটি।

পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন মাদারীপুর জেলা জাগপার সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন, জেলা নেতা আরিফ খলিফা, রবিন খলিফা, মঈন মিয়া, মো. ইসহাক খান ও সিজান হোসেনসহ অনেকে। তারা সকলে সমস্বরে বলেন, “দেশকে বাঁচাতে হলে প্রথমে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”

দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই ধরনের বক্তব্য ও দাবিগুলো একদিকে যেমন জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, অন্যদিকে তেমনি এটি একটি বড় রাজনৈতিক প্রশ্নও তুলে ধরছে—একটি গণতান্ত্রিক দেশে দীর্ঘস্থায়ী বিচারহীনতা কতোটা বিপজ্জনক হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে জাগপার মতো রাজনৈতিক শক্তির ভূমিকা এখন কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নির্ভর করবে জনমত ও সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫