প্রকাশ: ২৪ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর অনলাইন
ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে অবশেষে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে ইউরোপিয়ান জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ। মেক্সিকোর ক্লাব পাচুকার বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয় তুলে নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। তবে দলের এই গুরুত্বপূর্ণ জয়ের দিনে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে মাঠের বাইরে ঘটে যাওয়া এক অপ্রীতিকর ঘটনা। রিয়ালের জার্মান ডিফেন্ডার অ্যান্তোনিও রুডিগার অভিযোগ করেছেন, তিনি বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন।
ম্যাচ শেষে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন রিয়ালের প্রধান কোচ জাবি আলোনসো। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “রুডিগার আমাদের জানিয়েছে, ম্যাচ চলাকালীন সে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছে। বিষয়টি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি এবং ইতোমধ্যে ফিফা প্রোটোকল অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন তদন্ত চলছে। আমরা রুডিগারের প্রতি বিশ্বাস রাখছি এবং তার অভিযোগকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি।”
যদিও কোচ আলোনসো স্পষ্ট করে বলেননি যে, কারা বা কোন পক্ষ থেকে এই বর্ণবাদী আচরণ করা হয়েছে, তবে তিনি ঘটনাটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের ওপর জোর দেন। “এই ধরনের আচরণ ফুটবলের মাঠে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়,” বলেন আলোনসো, “এটি শুধু একজন খেলোয়াড় নয়, পুরো খেলাটির সম্মান ক্ষুণ্ণ করে।”
রুডিগার, যিনি মাঠে সবসময়ই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দেন, তার মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের প্রতি এই ধরণের আচরণ নিঃসন্দেহে দুঃখজনক। রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব বরাবরই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, এবং পূর্বে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনার প্রতিবাদ করেছে। এবারও ক্লাবের ভেতর থেকে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ফিফার পক্ষ থেকেও ইতোমধ্যে বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ মাঠের ভিডিও ফুটেজ, শ্রোতা ও দর্শকদের আচরণ, এবং ম্যাচের সময়কার অন্যান্য প্রাসঙ্গিক উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখছে। ফুটবলে বর্ণবাদ রুখতে ফিফা যে শূন্য সহনশীলতা নীতিতে রয়েছে, এটি সেই নীতিরই একটি পরীক্ষার সময়।
রুডিগার নিজেও তার ক্যারিয়ারে এর আগে একাধিকবার বর্ণবাদী মন্তব্য ও আচরণের শিকার হয়েছেন বলে জানান দিয়েছেন বিভিন্ন সময়। তবে এবারের ঘটনাটি ক্লাব বিশ্বকাপের মতো একটি আন্তর্জাতিক আসরে ঘটায় বিষয়টির গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে গেছে।
এখন সবার নজর রয়েছে তদন্তের ফলাফলের দিকে। সত্যিই যদি কোনো দর্শক বা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় এমন আচরণের জন্য দায়ী হন, তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা ফিফা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রিয়াল মাদ্রিদের জয়ে আনন্দের আবহের মাঝে এই বর্ণবাদী ঘটনার ছায়া ফুটবলপ্রেমীদের জন্য হতাশাজনক। এই ধরনের আচরণ কেবল খেলোয়াড়দের মনোবল ভেঙে দেয় না, বরং পুরো খেলাটির সৌন্দর্যকেই নষ্ট করে। ফুটবল একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও সহনশীলতার খেলা, যেখানে জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদে কোনও বিভাজন থাকার কথা নয়। খেলোয়াড়, ক্লাব এবং দর্শকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই কেবল এই অপসংস্কৃতি রোধ করা সম্ভব।