শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

ইসরায়েলের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা: বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হাইফা তেল শোধনাগার

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫
  • ৩৭ বার

প্রকাশ: ১৯ই জুন’ ২০২৫ । আজকের খবর ডেস্ক । আজকের খবর অনলাইন

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা ও সাম্প্রতিক যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র, হাইফা তেল শোধনাগার (বাজান রিফাইনারি) বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর দেশটির অর্থনীতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এক গভীর সংকেত হিসেবে ধরা পড়ছে।

হাইফার পূর্বাঞ্চলীয় শিল্প অঞ্চলে অবস্থিত এই শোধনাগারটি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলেই জ্বালানি উৎপাদন, সরবরাহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। এটি প্রতি বছর প্রায় ৯ থেকে ৯.৮ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াজাত করে, যার পরিমাণ প্রায় ৬৬ মিলিয়ন ব্যারেলের সমান।

এই বিশাল উৎপাদনক্ষমতার ফলে প্রতি বছর প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাজস্ব অর্জিত হতো, যা ইসরায়েলের জ্বালানি খাতের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করত।

কিন্তু চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত, রকেট হামলা ও নিরাপত্তাজনিত হুমকির কারণে আজ সেই শোধনাগারটি আর সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। নিরাপত্তা ও অবকাঠামো ঝুঁকি মাথায় রেখে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে উৎপাদন কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও এটি ‘অস্থায়ী’ বন্ধ বলেই উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ জ্বালানি বাজারে ও আন্তর্জাতিক জ্বালানি সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

বিশেষত, হাইফা রিফাইনারির উপর নির্ভরশীল দেশের বহু শিল্প-কারখানা, জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা এবং পরিবহন খাত এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শোধনাগারটি বন্ধ হয়ে যাওয়া শুধু একটি শিল্প স্থাপনার কার্যক্রম বন্ধ হওয়া নয়—বরং এটি ইসরায়েলি অর্থনীতির উপর একটি বহুমাত্রিক চাপ তৈরি করবে।

বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম নতুন করে বাড়তে পারে। কারণ মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের জ্বালানি সরবরাহের একটি অংশ এই শোধনাগারের মাধ্যমে প্রভাবিত হতো।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এর প্রভাব আরও তাৎপর্যপূর্ণ হবে, কারণ জ্বালানির ঘাটতি শুধু শিল্প খাতেই নয়, দৈনন্দিন জীবনযাত্রাতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

হাইফার এই তেল শোধনাগার দীর্ঘদিন ধরে শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল। এই অবকাঠামোর ক্ষতি বা অচলাবস্থা মানেই জাতীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক অবস্থানের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে।

ইসরায়েলি সরকার এই ঘটনাকে ঘিরে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো দীর্ঘমেয়াদী প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—এটি একটি “wake-up call”। চলমান যুদ্ধাবস্থা, নিরাপত্তা সংকট এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপে থাকা ইসরায়েলকে দ্রুত ভাবতে হবে, কিভাবে তারা তাদের শিল্প-অর্থনৈতিক অবকাঠামো রক্ষা করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

একটি মাত্র শোধনাগারের অচলাবস্থা যে কিভাবে একটি দেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা এবং জনজীবনকে নাড়িয়ে দিতে পারে, হাইফা রিফাইনারির ঘটনাই হয়তো তার বাস্তব উদাহরণ হয়ে থাকবে।

বিশ্বজুড়ে এখন নজর, এই সংকট থেকে ইসরায়েল কত দ্রুত এবং কিভাবে ঘুরে দাঁড়ায়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫