প্রকাশ: ১৯ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি কূটনৈতিক মিশন সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিষয়টি ঘিরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার কূটনৈতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে দাবি করেন যে, ইরানি আলোচকরা হোয়াইট হাউজে আসতে চায়, অথচ যুক্তরাষ্ট্র এখনো তাদের সে সুযোগ দেয়নি। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের জাতিসংঘ মিশন কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে।
মিশন তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে জানায়, “কোনো ইরানি কর্মকর্তাকে পা চাটার জন্য হোয়াইট হাউজের দরজায় বসে থাকতে বলা হয়নি।” এতে বোঝানো হয়েছে যে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনের অপেক্ষায় নেই এবং তারা কোনোভাবেই নিজেদের মর্যাদা হারাতে প্রস্তুত নয়।
ইরানি মিশনের ভাষ্যমতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যের পেছনে থাকা অসত্য ও বিকৃত তথ্যই কেবল নয়, তার চেয়েও ঘৃণিত হচ্ছে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তার দেওয়া হুমকি। মিশন জানায়, এই ধরনের হুমকি কেবল কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত নয়, এটি রাজনৈতিক অশালীনতার নিদর্শন এবং ইরানের বিরুদ্ধে একধরনের যুদ্ধের উসকানি।
ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র জানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা কোথায় অবস্থান করছেন, কিন্তু আপাতত তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের মন্তব্য ইরানে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তেহরানের দৃষ্টিতে এটি কেবল হুমকি নয়, বরং একতরফা আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা, যা তারা কখনোই মেনে নেবে না।
ইরানি মিশনের পোস্টে আরও বলা হয়েছে, তেহরান কখনোই ‘জোর করে চাপিয়ে দেওয়া আলোচনায়’ অংশ নেবে না এবং যদি যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো পক্ষ হুমকি দেয়, তবে তারা পাল্টা হুমকি দিতে দ্বিধা করবে না। তারা আরও জানিয়েছে, ইরান নিজেকে আত্মরক্ষার জন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত এবং প্রতিটি আগ্রাসনের জবাবে তারা সুনির্দিষ্ট ও কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সমঝোতার’ পথে হাঁটতে অনিচ্ছুক। বরং তারা নিজেদের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও ছাড় দিতে নারাজ। সাম্প্রতিক এই পাল্টাপাল্টি বিবৃতি ও কূটনৈতিক উত্তেজনা ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও জটিলতা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।