শিরোনাম :
আকাশ ভেঙে আগুনের ঝরাপাত — ১৮৩৩ সালের সেই অলৌকিক উল্কাবৃষ্টি যেভাবে বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে নাড়া দিয়েছিল “শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ” উত্তরা হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে ক্ষমতাবান পুলিশ কর্মকর্তা: দেশে থেকে পালিয়ে গেলেন বিদেশে – বিচারহীনতার রহস্য তামিম ইকবাল রাজনীতিতে যাত্রা শুরু নিয়ে যা বললেন নগরভবনে মেয়র ইশরাকের সভা অনুষ্ঠিত, তিনি পেলেন শুভেচ্ছা ও ক্রেস্ট ঈদযাত্রার ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৯০ জন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো ইরান, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা নয় হজযাত্রী নিয়ে ভারতে উড়োজাহাজের চাকার সমস্যা, বের হলো ধোঁয়া ও আগুনের ফুলকি ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাথে বৈঠকে মির্জা ফখরুল ট্রাইব্যুনালে হাজিরি দেন সাবেক আইজিপি মামুন

“ড. ইউনূসের প্রতি বিএনপির অনুরোধ: মনক্ষুণ্ন না হওয়ার আহ্বান”

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ জুন, ২০২৫
  • ১৬ বার

প্রকাশ: ৩রা জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন তিনি দলটির প্রতি মনক্ষুণ্ন না হন। তিনি বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আমাদের ওপর আপনি মনঃক্ষুণ্ন হবেন না। আমাদের চেয়ে বেশি সমর্থন আপনাদের আর কেউ দিয়েছে বলে জানি না। আমাদের প্রতিপক্ষ ভাববেন না।”

সালাহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, বিএনপি সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করছে এবং প্রকৃত বন্ধুর মতোই তারা সরকারের হাতকে শক্তিশালী করতে সমালোচনা করেন। সোমবার জাতীয় ঐক্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে।

তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের কর্মকাণ্ডে কখনও কখনও তাদের মনে হয়েছে যেন তারা বিএনপিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও দাবি করেন, কিছু মহল জাতির মধ্যে বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। “অনেকে বলেছে, পার্শ্ববর্তী একটি দেশ নির্বাচন চায়। তাহলে কি তাদের ইচ্ছায় আমরা দীর্ঘদিন নির্বাচন চাইব না? তারা কেন নির্বাচন চায়, সেটা তারা জানে। তারা বলেছে, তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন চায়। কিন্তু আপনারা তো কাউকে কাউকে বাদ দিয়েছেন। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে তারা কী বলছে,” বলেন সালাহউদ্দিন।

তিনি আরও বলেন, “দুঃখজনকভাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুধু একটি মাত্র দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এ বক্তব্য আমাদের আহত করেছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, ইউরোপ-আমেরিকা যদি নির্বাচন চায়, তখন তো কোনো আপত্তি ওঠে না, কিন্তু দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচনের দাবি উঠলে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় কেন?

সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তিন মাস আগেই সব দল একমত হয়েছিল। ইচ্ছে করলে এর মধ্যেই সেগুলো বাস্তবায়ন করা যেত। বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত প্রস্তাবেও প্রায় সবাই একমত হয়েছে। তিনি বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন শুধু বিচারকার্য অবশিষ্ট। কিন্তু বিচারের ক্ষেত্রে রোডম্যাপ দেওয়া যায় না, কারণ তা হবে অবিচার। বিচার তার নিজস্ব গতিতে চলবে। সরকার ও আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।”

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জাতি ১৫ আগস্টের আগে অন্তত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিচারের রায় দেখতে চায়। তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে জোরাজুরি নেই, কিন্তু জাতির প্রত্যাশা রয়েছে। কিছু মামলায় আসামিদের চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।”

সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার আদালতে একটি মামলা দায়ের করতে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আমি নাকি মামলা করছি না। আমি কাল আদালতে যাব মামলা দায়ের করতে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার বিচার প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমরা স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি, যা জনগণের আস্থা বাড়াচ্ছে।” ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ নেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “আদালতের রায় বাস্তবায়ন করুন, যাতে মানুষ আইনের শাসন দেখতে পায়।”

বিএনপি নেতা দাবি করেন, তার দল সরকারকে সমালোচনার মাধ্যমে সহায়তা করছে, যা প্রকৃত বন্ধুর কাজ। তিনি বলেন, “যারা শুধু প্রশংসা করে, তারাই সরকারের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। আমরা সরকারের সমালোচনা করি, কারণ আমরা তার বন্ধু। আমরা আপনার সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছি। দয়া করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিন।”

সংস্কার কমিশনের গতি নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা সংস্কারের প্রধান প্রবক্তা। আপনারাই যদি দায়িত্ব না নিতেন, তাহলে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমাদেরই সংস্কার করতে হতো। আমাদের ৩১ দফার সঙ্গে আপনার প্রস্তাবের অনেক মিল রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, বিএনপি সরকারের প্রশংসা করতে আসেনি, বরং আলোচনা করতে এসেছে। “ডিসেম্বরের পর নির্বাচন যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমরা কেন ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চাই, তা বারবার বলেছি,” বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব হবে, যেখানে সবাই নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করবে, কিন্তু একই পথে এগিয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫