প্রকাশ: ২৫শে জুন, ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | আজকের খবর অনলাইন
ব্যাট হাতে ধৈর্য, দৃঢ়তা, অভিজ্ঞতা—সবই থাকার পরও বারবার একই ভুলে ফিরে আসা যেন নিয়তির মতোই বরণ করে নিচ্ছেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশের টপ অর্ডারে একসময়ের নির্ভরতার প্রতীক এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আজও দেখালেন দৃঢ় শুরুর পর কীভাবে তা নষ্ট করতে হয় একটি বাজে শটে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা মুমিনুল কঠিন শুরুর ধকল পেরিয়ে একপ্রকার থিতু হয়ে গিয়েছিলেন। ৭১ বল স্থায়ী এক জুটিতে তিনি তুলে নেন ৩৮ রান, ব্যাট করছিলেন নির্ভরতার বার্তা দিয়ে। তবে যখন মনে হচ্ছিল, এবার হয়তো মুমিনুল ঘুরে দাঁড়াবেন, তখনই যেন দৃশ্যপট বদলে গেল এক মুহূর্তে।
লঙ্কান অধিনায়ক ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা বল হাতে আসার পরই ঘটে সেই দুর্ঘটনা। প্রথম বলেই কিছুটা অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে কাভার অঞ্চলের ফিল্ডারের হাতে সরাসরি ক্যাচ তুলে দেন মুমিনুল। এমন একটি শট যে অভিজ্ঞ একজন ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে একদমই প্রত্যাশিত নয়, সেটি তার নিজের প্রতিক্রিয়াতেই বোঝা গেল। উইকেট হারিয়ে হতবাক ও হতাশ দেখা যায় তাকে। এমন শট খেলার পর মনে হচ্ছিল, নিজেই বুঝে উঠতে পারছেন না—কেন ও কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন।
ব্যক্তিগত ২১ রানে থেমে যায় তার ইনিংস, যেখানে ছিল ৩৯ বলে তিনটি চার। তবে শুধু পরিসংখ্যানই নয়, যেভাবে ইনিংসটি শেষ হয়েছে, সেটাই ভক্ত-সমর্থকদের মনে সবচেয়ে বেশি হতাশা ডেকে আনছে। কারণ বারবার একই ধরনের আউটে তার ফিরে যাওয়া, এবং সেটিও এমন সময় যখন তার দলের প্রয়োজন ছিল এক সুদৃঢ় ইনিংস।
ম্যাচের এই পর্যায়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৭ ওভারে ২ উইকেটে ৪৫ রান। উইকেটে তখনো ছিলেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলাম ও প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে দুই সেঞ্চুরির অধিকারী হওয়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
মুমিনুলের এমন ব্যর্থতা শুধু এই ম্যাচে নয়, সামগ্রিকভাবে তার সাম্প্রতিক ব্যাটিং ফর্ম নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কিছুদিন আগেও টেস্ট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন যেন নিজের জায়গাটা ধরে রাখতেই লড়তে হচ্ছে তাকে।
এমন একটি পরিস্থিতিতে প্রত্যাবর্তনের পথ কঠিন বটে, তবে অসম্ভব নয়। তবে সেটি যদি হয় প্রতিটি সুযোগকে কঠোরভাবে কাজে লাগিয়ে, তবেই। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউকে অপেক্ষা করে না—খেলোয়াড়দের হয় নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, নয়তো সময় তাকে বিদায় বলে।
আজকের ইনিংসটিও তাই মুমিনুলের ক্যারিয়ারের আরেকটি স্মরণীয় কিন্তু হতাশাজনক পর্ব হয়ে রইল—যেখানে প্রতিশ্রুতির আলোয় শুরু করে ভুলের অন্ধকারেই হারিয়ে গেল সম্ভাবনার একটি ইনিংস।