প্রকাশ: ২৪শে জুন ২০২৫ | নিজস্ব সংবাদদাতা | আজকের খবর অনলাইন
কুমিল্লার মুরাদনগরে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে নিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে মুরাদনগর সদরে আয়োজিত এই মিছিলে অংশ নেয় সর্বস্তরের জনসাধারণ।
যমুনা টেলিভিশনের এক সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ কায়কোবাদকে উদ্দেশ্য করে যে মন্তব্য করেন, তা মুরাদনগরের মানুষের হৃদয়ে রীতিমতো বিদ্রোহের আগুন জ্বেলে দেয়। এলাকার রাজনৈতিক ও সাধারণ জনগণ উভয়েই এই মন্তব্যকে ‘উদ্ভট’, ‘মিথ্যাচার’ এবং ‘চরমভাবে অপমানজনক’ হিসেবে আখ্যা দেন। বিক্ষোভ মিছিলে তারা একযোগে স্লোগানে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করেন।
বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, কাজী কায়কোবাদ শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেতা নন, তিনি মুরাদনগরের মাটি ও মানুষের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত একজন জননন্দিত অভিভাবক। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে জনসেবা ও এলাকার উন্নয়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। এমন একজন নেতাকে কেন্দ্র করে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো ব্যক্তিগত বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ এবং এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার পরিপন্থী বলেও বক্তারা মন্তব্য করেন।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক বলেন, “বিএনপিকে সামনে রেখে কিছু নতুন মুখ আলোচনায় আসার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের নেতা কায়কোবাদ সাহেবের মতো একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা সত্যিই হতাশাজনক।”
এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “রাজনীতিতে তরুণদের অংশগ্রহণ আমরা স্বাগত জানাই, কিন্তু তাদের আচরণ যদি অসভ্য ও শিষ্টাচারবর্জিত হয়, তাহলে সেটি রাজনীতি নয়, ক্ষমতার দম্ভের বহিঃপ্রকাশ। শেখ হাসিনার ছত্রছায়ায় থেকে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির প্রশিক্ষণ নিয়ে এরা এখন ফ্যাসিস্টরূপে নিজেদের তুলে ধরছে।”
তিনি আরও বলেন, “কায়কোবাদ দাদার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। এবার নিজেই টেলিভিশনের পর্দায় এসে একজন প্রবীণ নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে আসিফ মাহমুদ।”
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাধিক বক্তা সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “রাজনীতি করতে চাইলে মাঠে এসো, উপদেষ্টার চেয়ার ছেড়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াও। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মুরাদনগরের নেতার সম্মানহানি করলে জনগণ তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে।”
এই বিক্ষোভ মিছিল থেকে স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায় যে, মুরাদনগরের মানুষ তাদের প্রিয় নেতার সম্মান রক্ষায় একতাবদ্ধ এবং ভবিষ্যতে এমন কোনো বক্তব্যকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না। রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও মূল্যবোধকে ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাধারণ জনগণ।
মুরাদনগরের জনজীবনে কায়কোবাদ এখনো এক প্রভাবশালী এবং সম্মানিত নাম। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রকাশ্য বক্তব্য যে কী পরিমাণে স্থানীয় আবেগে আঘাত হেনেছে, তা আজকের বিক্ষোভই তার বাস্তব প্রমাণ।