শিরোনাম :
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে, দলীয়ভাবেও আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল উত্তরের অচেনা বিস্ফোরণ: লেবাননে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় নিহত ৩, আহত ১৩ কারামুক্তির পর পর্দায় ফেরার বার্তা: ‘জ্বীন-৩’ দিয়ে ফিরলেন নুসরাত ফারিয়া জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ চীন সফরে জাতীয় সমাবেশে জামায়াতের বার্তা: ৭ দফা দাবিতে বড় গণসমাবেশের প্রস্তুতি বাস রুট পারমিট নিয়ে ঢাকার পরিবহন খাতে অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতায় আরটিসি বরিশালে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল জনজীবন নিঃসঙ্গ জীবনের করুণ পরিণতি: পাকিস্তানে অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের পচনধরা লাশ উদ্ধার ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ হাতছাড়া, হতাশ মিরাজ জানালেন ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা পুনরায় মহাসংঘর্ষ: রিয়াল-পিএসজির দ্বৈরথে আজ ইতিহাস লিখবে কে?

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক দিনে প্রাণ গেল ৬৪ ফিলিস্তিনির

আজকের খবর ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫
  • ৬১ বার
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় এক দিনে প্রাণ গেল ৬৪ ফিলিস্তিনির
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা | সংগৃহীত

প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৫ | আজকের খবর ডেস্ক | আজকের খবর অনলাইন

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬৪ জন ফিলিস্তিনি। সোমবার (১৬ জুন) তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু অ্যাজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এই প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটে, যা চলমান সংঘাতের ভয়াবহতাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে জানানো হয়, একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৮২ জন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের অব্যাহত আক্রমণে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার ৪৩২ জনে এবং আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার ৯২৩ জন।

এই দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয় ২০২৩ সালের অক্টোবরে, যখন গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি বাহিনী ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বারবার উদ্বেগ প্রকাশ ও যুদ্ধবিরতির আহ্বানের পরও হামলা বন্ধ হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারির ১৯ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপের মুখে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। তবে সেই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি বেশিদিন। যুদ্ধবিরতির মাত্র দুই মাসের মধ্যেই, গত ১৮ মার্চ ভোরে ইসরাইল আবারো গাজার ওপর পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে।

নতুন করে শুরু হওয়া এই অভিযানেও প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। কেবল ১৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ হাজার ১৩৯ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার ৮৮২ জন ফিলিস্তিনি। এদিকে, গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। ফলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় আরও চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি, ওষুধসহ ন্যূনতম প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর তীব্র ঘাটতিতে দিন কাটাচ্ছে লাখো মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।

গাজায় চলমান এ সামরিক অভিযান এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইতোমধ্যে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে একটি মামলা চলমান রয়েছে। এসব পদক্ষেপ ইঙ্গিত দেয় যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে আর কেবল যুদ্ধের অংশ হিসেবে দেখছে না বরং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

সাম্প্রতিক এই হতাহতের ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, গাজায় সংঘাত থামেনি বরং তা আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ, মানবিক সহায়তার বাধাগ্রস্ততা এবং আইনগত পদক্ষেপের মধ্যেও ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসী অবস্থান পরিস্থিতিকে শুধু জটিলই করে তুলছে। গাজার নিরীহ জনগোষ্ঠী প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, তা বিশ্বের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো। পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে কেবল নীতিগত সমর্থন নয়, বরং জরুরি কার্যকর হস্তক্ষেপ ও কূটনৈতিক চাপের মাধ্যমেই একটি মানবিক সমাধান সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো খবর..

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫